বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। — ফাইল চিত্র।
বাম আমলে প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রায় ৪০০ জনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন, চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ওই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে যত মামলা দায়ের হয়েছে, সকলকে চাকরি দিতে হবে। তিন মাসের মধ্যে মামলাকারীদের সকলকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। হাওড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শককে ওই চাকরি দেওয়ার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০০৯ সালে প্রাথমিকে ১,৮২৬ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় তৎকালীন বাম সরকার। ২০১০ সালে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরের বছর অর্থাৎ, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। নতুন সরকার বাম আমলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। তারা নতুন প্যানেল প্রকাশ করে। ওই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। পরে সুপ্রিম কোর্টেও ওই মামলা গিয়েছে। শীর্ষ আদালত তৃণমূল সরকারের পক্ষে রায় দেয়। তবে শীর্ষ আদালত জানায়, বাম আমলের আবেদনকারী (যাঁরা বাম আমলে চাকরির আবেদন করেছিলেন)-দের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দিতে হবে। নতুন কোনও চাকরিপ্রার্থীর আবেদন গণ্য হবে না ওই প্যানেলের ক্ষেত্রে। আদালতের নির্দেশের পরে ওই প্যানেল নিয়েই ২০১৪ সালে আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য।
২০১৫ সালে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হলে গোপালচন্দ্র কাঞ্জি-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অভিযোগ তুলে আবার হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং রবিলাল মৈত্রের সওয়াল, অনেক নতুন আবেদনকারীকে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক হওয়ার জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা না-থাকা সত্ত্বেও অনেককে চাকরি দেওয়া হয়েছে। ওই নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন করেন মামলাকারীরা।
পরে ওই একই অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। গত বছর কয়েক জন মামলাকারীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা নির্দেশ দেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে সব মামলাকারীকে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে।