সিবিআই তদন্তের আর্জি খারিজ আদালতে
নোট-কাণ্ডে ঝাড়খণ্ডের ধৃত তিন বিধায়কের আর্জি খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। গত সপ্তাহে ওই তিন বিধায়কের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণে নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় সিআইডি যে তদন্ত করছে, সেই তদন্তের ভার সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন ওই তিন জন। তাঁদের সেই আবেদন খারিজ করে আদালতের নির্দেশ, রাজ্য পুলিশই ওই ঘটনার তদন্ত করবে। বৃহস্পতিবার সরকার পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার জরুরি ভিত্তিতে ঝাড়খণ্ডের ধৃত তিন বিধায়কের আর্জি শুনেছিল আদালত। কোর্টের কাছে তাঁদের আবেদন ছিল, অবিলম্বে সিআইডি তদন্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। প্রয়োজনে সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক তদন্তভার। মামলাকারীদের দাবি, রাজনৈতিক ভাবে তদন্তকে প্রভাবিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজনীতির রং লাগানো শুরু হয়ে গিয়েছে। এফআইআরের কপিও দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্য পুলিশের ওয়েবসাইটেও তা আপলোড করা হয়নি। মামলাকারীদের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা এবং অয়ন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, হিসাব বহির্ভূত টাকা থাকায় কালো টাকা আইন এবং আয়কর আইনের আওতায় পদক্ষেপ করা হোক। সিআইডির এই ঘটনার তদন্ত করার কোনও অধিকার নেই।
এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সরকারি আইনজীবী আদালতকে জানান, অভিযুক্ত কখনওই ঠিক করে দিতে পারেন না, কোন তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করবে। সরকার পক্ষের সওয়ালের পর আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তদন্তভার হস্তান্তরের যে আবেদন করা হয়েছে, সেখানে পর্যাপ্ত যুক্তি নেই। বিচারপতি ভট্টাচার্যের নির্দেশ, ধৃত তিন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে নগদ অর্থ উদ্ধারের তদন্ত করবে সিআইডি-ই। অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে না। রাজ্য পুলিশের তদন্তে এখনই হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে হাওড়ার পাঁচলা-রানিহাটি মোড়ে গ্রেফতার করা হয় ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক-সহ পাঁচ জনকে। তাঁদের গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। তাঁদের কাছ থেকে টাকার ব্যাপারে কোনও সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় ওই তিন বিধায়ক— রাজেশ কাছাপ, নমন বিক্সাল কোঙারি এবং ইরফান আনসারিকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় গাড়িচালক চন্দন কুমার ও কংগ্রেস নেতা কুমার প্রতীককে। এই ঘটনায় ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে দাবি করে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। সিআইডি-তদন্তের বিরুদ্ধেই আদালতে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের ওই তিন বিধায়ক। সে আর্জিই খারিজ হয় বৃহস্পতিবার।