স্কুলে যৌন হেনস্থা রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা কলকাতা হাইকোর্টের।
শিশুদের যৌন হেনস্থা রুখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য স্তরে নোডাল অফিসার, প্রতিটি স্কুলে কাউন্সেলর নিয়োগের মতো একাধিক নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। জি ডি বিড়লা কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবার দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ।
গত বছরের শেষের দিকে জি ডি বিড়লা স্কুলে এক শিশু ছাত্রী নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। অভিভাবকদের বিক্ষোভ, দুই শিক্ষককে গ্রেফতার-সহ ওই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সেই সময়ই নির্যাতিতা শিশুর বাবা একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালীনই আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। আইনজীবী এডুলজি রাজ্যের স্কুলগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ৯৮ পাতার রিপোর্ট জমা দেন আদালতে।
সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া শুক্রবার এক গুচ্ছ নির্দেশিকা দেন। বিচারপতির নির্দেশ, রাজ্য স্তরে একটি নোডাল বডি তৈরি করা এবং তার প্রধান হিসাবে এক জনকে নিয়োগ করতে হবে। প্রতিটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক, দু’জন অভিভাবক এবং একজন বিশিষ্ট মানুষকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। যৌন নির্যাতন বা এই ধরনের কোনও অভিযোগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে কমিটিকে জানাতে হবে। সিলেবাসে যৌন সতর্কতা ও সচেতনতার পাঠ যোগ করতে হবে। কর্মী বা শিক্ষক নিয়োগের সময় তাঁর অতীত কর্মক্ষেত্র এবং অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে হবে। গুড টাচ-ব্যাড টাচ এর বিষয়ে পডুয়াদের শিক্ষা দিতে হবে।
আরও পডু়ন: ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেডই লোকসভা নির্বাচনের টার্নিং পয়েন্ট: মমতা
এর বাইরেও প্রতিটি স্কুলে কাউন্সেলর নিয়োগের কথাও বলেন বিচারপতি পাথেরিয়া। যদিও তাতে আপত্তি তোলেন রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গাইডলাইন মানতে রাজি। কিন্তু কাউন্সেলর নিয়োগের বিষয়টি মানা সম্ভব নয়। কারণ, রাজ্যে ১ লক্ষেরও বেশি সরকারি স্কুল রয়েছে। ফলে লক্ষাধিক কাউন্সেলর নিয়ুক্ত করতে হবে। কাউন্সেলারদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়া উচিত। এদের প্রশিক্ষণ নিয়েও সমস্যা হবে। রাজ্যের এত পরিকাঠামো নেই।’’
আরও পড়ুন: সাড়ে ৫ লাখ দিলেই রেলে চাকরি! রেলকর্তার ভিডিয়ো ফাঁস হতেই হুলস্থূল, বড় চক্রের হদিশ
তখন বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া বলেন, ‘‘এটা সাধারণ মামলা নয়, শিশুদের মামলা। কাউন্সেলর নিয়োগ করতে হবে। আমি নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের সমস্যা বুঝতে পারছি। অসুবিধা হলে প্রয়োজনে ভাগে ভাগে এক বছরের মধ্যে কাউন্সেলর নিয়োগের কাজ শেষ করতে হবে।’’
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)
হাইকোর্ট এদিন আরও জানায়, ৬ মাস পর হাইকোর্টে সমীক্ষা করে দেখবে এই নির্দেশিকা কতটা কার্যকর করা হয়েছে। স্কুলের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও এবিষয়ে স্কুলকেই সতর্ক করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরজানতে পড়ুন আমাদেররাজ্যবিভাগ।