ছবি: পিক্স্যাবে।
প্রেসিডেন্সি জেল থেকে বন্দি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুক্রবার এই মামলার শুনানি হয়। আদালত নির্দেশ দেয়, হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে থাকা সমস্ত নথি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) কাছে জমা দিতে হবে। এজি এক জন ডিজিপি পদমর্যাদার অফিসার নিয়োগ করবেন। ওই অফিসার তদন্তের রিপোর্ট মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দেবেন।
যদিও এই বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্যের তরফে রাজীব কুমারের নাম প্রস্তাব করা হয়। রাজ্যের যুক্তি, রাজীব কুমার তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে প্রযুক্তির বিষয়টি তিনি ভাল জানবেন। তখন মামলাকারীর আইনজীবী তাতে আপত্তি জানান। তিনি পাল্টা বলেন, “প্রয়োজনে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটরকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।” এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ ফেব্রুয়ারি।
পাশাপাশি এই মামলায় জেল কর্তৃপক্ষের যে গাফিলতি ছিল তা-ও উঠে এসেছে। সেই প্রেক্ষিতেই ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, এমন পুলিশ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না, যিনি সরাসরি জেলের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এই মামলায় জেল কর্তৃপক্ষের আইনজীবী অমিতেশ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “জেলের ক্যামেরা চলছিল। লাইভ ছবিও উঠেছে। কিন্তু ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ড (ডিভিআর) কাজ না করায় রেকর্ড হয়নি। ওই বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের দেখানো হলে তাঁরাও ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেননি।”
গত ৬ ডিসেম্বর বেআইনি ভাবে দেশি মদ বিক্রির অভিযোগে বাগনানের বাসিন্দা ৫০ বছরের রঞ্জিত ভৌমিককে মারধর করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধৃতকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেয় উলুবেড়িয়ার মহকুমা আদালত। প্রায় ১৫ দিন ধরে জেলে ছিলেন তিনি। জামিন পাওয়ার দিনই জেল থেকে উধাও হয়ে যান রঞ্জিত।
বন্দি রঞ্জিতকে কেন সন্ধ্যার পর কেন ছাড়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আদালতে। সওয়াল করেন মামলাকারীদের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী এবং সূর্যনীল দাস। আইনজীবী শ্রীজীব আদালতে বলেন, “শাহরুখ খানের পুত্রকেও সন্ধ্যার পর ছাড়া হয়নি। তা হলে এই ব্যক্তিকে কেন ছাড়া হল? তিনি কি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন?” এই প্রসঙ্গে আদালতের মন্তব্য, “রাতেই ছাড়া হল কেন বন্দিকে? সত্যিই কি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন তিনি?” আদালত আরও প্রশ্ন তোলে, ভিডিয়ো ফুটেজ নেই কেন। তখন জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, যখন ওই ব্যক্তিকে আনা হয়েছিল তখন ওয়ার্ড বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এর পরই আদালত অফিসার নিয়োগের নির্দেশ দেয়।