রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। ফাইল ছবি।
কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়েই মূলত আদালত অবমাননা মামলা। তা নিয়ে শুনানি চলাকালীনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করা হল বাকি ৪৮৫ কেন্দ্রীয় বাহিনীও পাঠানো হবে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটের জন্য। ফলে হঠাৎই বদলে গেল মামলার সওয়াল জবাব। আদালত জানাল, আজ আর এই নিয়ে শুনানি নয়, আবার আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার এই নিয়ে শুনানি হবে ডিভিশন বেঞ্চে।
পঞ্চায়েত নিয়ে আদালত অবমাননা মামলায় কমিশন আদালতকে জানাচ্ছিল, কেন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাচ্ছে না। কমিশনের আইনজীবী বলছিলেন, কেন্দ্র আদালত নির্দেশিত ৮২২ কোম্পানি বাহিনী দেয়নি। তাই সমস্ত বুথে আদালতের নির্দেশ মতো বাহিনী মোতায়েন করা যায়নি। অন্য দিকে, রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্র না পাঠালেও রাজ্যের কাছে ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী রয়েছে। এর পরেই ভার্চুয়াল মাধ্য়মে নিজের বক্তব্য জানাতে শুরু করেন মামলাকারী বিজেপির আইনজীবী গুরুকৃষ্ণ। খবরটি এসে পৌঁছয় তখনই।
সওয়াল চলাকালীনই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন সান্ডিল্যকে উঠে যেতে দেখা যায় কমিশনের আইনজীবীর কাছে। তিনি বলেন, এখনই আদালতকে জানান কেন্দ্র ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী মঞ্জুর করে দিয়েছে। মামলাকারীর আইনজীবীকে মাঝপথে থামিয়েই এর পরে আদালতে কমিশনের আইনজীবী কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মঙ্গলবার পঞ্চায়েত মামলায় আবার শুনানি। আদালত অবমাননা মামলায় শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, আগের যত নির্দেশ সমস্তই কার্যকর করা হয়েছে কি না জানিয়ে কমিশনের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল হাই কোর্ট। মঙ্গলবার পরিবর্তীত পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে আবার সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে কমিশনকে। জানাল আদালত।
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল আদালত প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশন বলল ৬১ হাজার ৬৩৬টি বুথেক মধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ৪৮৩৪টি। স্পর্শকাতর বুথে অতিরিক্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে এখন যা কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে তাতে প্রতি বুথে দেওয়া সম্ভব নয়।
হাই কোর্টে কমিশন জানাল, ভোটারদের আস্থা বাড়ানো এবং এলাকা টহলদারির জন্য আপাতত কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাখার কথা ভাবা হয়েছে।কারণ, আদালতের নির্দেশমতো ৮২২ কোম্পানি বাহিনীর ব্যবস্থা করা যায়নি। কেন্দ্র ৩৩৭ কোম্পানি দেবে বলেছে। তার মধ্যে ১১৩ কোম্পানি বাহিনী এখনও আসেনি। তবে কেন্দ্র বলেছে শীঘ্রই চলে আসবে।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে শুরু হল মামলার শুনানি।
পঞ্চায়েত ভোটের পদক্ষেপ নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা করেছিলেন বিরোধীরা। অভিযোগ ছিল, ভোট নিয়ে আদালতের নির্দেশ মানেনি কমিশন। সেই মামলায় সোমবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। জানিয়েছিল, সমস্ত নির্দেশ মানা হয়েছে এই মর্মে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্য এবং কমিশনকে। সোমবার দুপুরে সেই মামলার শুনানি কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। ইতিমধ্যেই আদালত চত্বরে এসে পৌঁছেছেন নির্বাচন কমিশনের সচিব এবং কর্তারা।