বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, এ বার সভা, মিছিলের জন্য থানায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বদলে গেল রাজনৈতিক সভার অনুমতি নেওয়ার প্রক্রিয়া। কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, এখন থেকে থানা নয় পুলিশ সুপার বা কমিশনারেটদের কাছে আবেদন করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। একইসঙ্গে শাসকদলের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সভা, মিছিলের অনুমতির ক্ষেত্রে পুলিশ সুপার বা কমিশনারেট সমান নীতি বজায় রাখবে এবং কোনও বাছবিচার করবে না বলেও আশা প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
শুক্রবার এ ব্যাপারে একটি সার্বিক নীতি তৈরি করে দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। রাজ্যে বিরোধী দলগুলির রাজনৈতিক সভা করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল। শুক্রবার এ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি মান্থার এজলাসে। সেখানে এই নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি বলেছেন, ‘‘আশা করছি, রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে বাছবিচার বা পক্ষপাতিত্ব না করে কোনও কর্মসূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পুলিশ।’’ একই সঙ্গে কী প্রক্রিয়ায় এই ধরনের সভার অনুমতি নিতে হবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা।
বিচারপতি মান্থার নির্দেশ, এ বার সভা, মিছিলের জন্য থানায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে সরাসরি পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করা যাবে। কোন দল কখন কর্মসূচির জন্য আবেদন জানাল তা আলাদা ভাবে রেজিস্ট্রার করে রাখতে হবে পুলিশ সুপারকে। আবেদনের পরিস্থিতি (স্ট্যাটাস) অনলাইনে দেখার ব্যবস্থা করতে হবে। যে আগে আবেদন করবে, তার বিষয়টি আগে বিবেচনা করা হবে। এখানে কোনও বৈষম্য যেন না থাকে। মিছিলের রুট, সভার স্থান, কত মানুষের জমায়েত হবে খোঁজখবর নিয়ে তা নথিবদ্ধ করতে হবে পুলিশকে। শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন নিশ্চিত করতে হবে। মানতে হবে শব্দবিধি।
ভাঙড়ে আইএসএফ এবং সিপিএমের সভা এবং মিছিলে পুলিশ অনুমতি দেয়নি এই অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সম্প্রতি সভা, মিছিল করতে চেয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। প্রায়ই সব ক্ষেত্রেই পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। তাই এ বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতি বা বিধি তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছে আদালত। শুক্রবার অবশ্য ভাঙড়ে সিপিএমকে সভা করার অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়েছে রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী জানান, ভাঙড়ের কর্মসূচিতে আপত্তি নেই পুলিশের। এখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। তা মিটলেই ওই কর্মসূচি করা যাবে।