৮৫০ জনের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু । গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে সম্প্রতি যে ৮৫০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ দিয়েছে এসএসসি, তা কিসের ভিত্তিতে? জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। এঁদের প্রায় সকলেই ধর্নায় বসেছিলেন জেনে আদালত প্রশ্ন তুলেছে, ‘‘হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ধর্না দিতেই চাকরি হয়ে গেল? এমনকি তাঁদের জন্য শূন্যপদও তৈরি করে ফেলল স্কুল সার্ভিস কমিশন? বাকি যোগ্যরা তা হলে কোথায় যাবেন?’’
এ ব্যাপারে আদালতে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এসএলএসটি-র পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি, এই ৮৫০ জনই ধর্না-বিক্ষোভ করছিলেন। তাঁরা জানতে চেয়েছেন, ধর্না দিয়েই কি চাকরি পেলেন এঁরা। তা না হলে এঁদের নিয়োগের আগে কেন বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি এসএসসি। কেন এসএলএসটি পাশ করা সমস্ত যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি? শুক্রবার এই অভিযোগ শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি জানতে চেয়েছেন, শুধু মাত্র ধর্না দিতেই যদি চাকরি দিয়ে দেয় এসএসসি, তবে বাকি যোগ্যরা কী করবেন? আদালত অবশ্য শুধু প্রশ্নই তোলেনি, এ নিয়ে অভিযোগকারীদের মামলা করার অনুমতিও দিয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালের এসএলএসটি পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত। অভিযোগকারীদের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতকে জানিয়েছেন, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে শারীরশিক্ষা বিষয়ে ১০১৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল ২০১৬ সালে। কিন্তু এই নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এবং বহু অযোগ্য প্রার্থী সুযোগ পেয়েছেন এই দাবিতে কলকাতায় ধর্না শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী এসএলএসটির জন্য ভবিষ্যতের শূন্যপদের ঘোষণা করেন। সেই পদে নিয়োগও করা হয় ধর্নায় বসা ৮৫০ জন এসএলএসটি আন্দোলনকারীদের। কিন্তু বাকি যোগ্যরা এ বিষয়ে জানতেই পারেননি। কেন না এসএসসি কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে এঁদের নিয়োগের সুপারিশ দেয়নি। আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি এসএসসির ইচ্ছেমতো এঁদের নিয়োগ করা হল? তাদের কি উচিত ছিল না এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সবাইকে সুযোগ করে দেওয়ার।
শুভজিৎ রায়, চন্দ্রকান্ত মণ্ডল-সহ বেশ কয়েক জন শুক্রবার এই বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁদের মামলা করার অনুমতি দেন বিচারপতি বসু। আগামী বুধবার মামলাটির শুনানি হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে।