বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মেডিক্যাল নিট-এ ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে কিছু ছাত্রছাত্রী সংরক্ষিত কোটায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীর নাম, ঠিকানা ও জাতিগত শংসাপত্র ৩ অক্টোবর হলফনামা আকারে আদালতে জমা করতে হবে বলে সোমবার রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, যদি দেখা যায় অভিযুক্তদের জাতিগত শংসাপত্র ভুয়ো, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই জাতিগত শংসাপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের ইতশা সরেন। ২০২৩ সালের নিট দিয়ে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান ইতশা। প্রায় ২৭ জনের নামে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের আসন দখলের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘সিনহা, ভৌমিক, মণ্ডল, বড়ুয়া— এঁরা কি সত্যি সংরক্ষিত কোটায় পড়েন?’’ এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩ অক্টোবর।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘আমাদের সরকারের কী ভূমিকা? কে উপাচার্য? রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে? মুখ্যমন্ত্রী কি নিজেই? নাকি অন্য কেউ? এই বিষয়টা কে দেখেন?’’ সরকারি কৌঁসুলি জানান, কোনও উপাচার্য নেই। তবে একটা দল আছে, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক জন প্রতিনিধি থাকেন। অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় নামে এক ডাক্তার এর প্রধান। বিচারপতি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কী ভূমিকা?’’ আবেদনকারীর আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য জানান, এই পরীক্ষা হয় দেশ জুড়ে। কেন্দ্র-রাজ্য দু’পক্ষেরই ভূমিকা সমান। মেডিক্যাল বোর্ডের ডিরেক্টর দেবাশিস ভট্টাচার্য এই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার জন্য কোর্টের কাছে এক সপ্তাহ সময় চান।
মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের ডিরেক্টরকে ডেকে পাঠান। আদালতের প্রশ্ন, অভিযোগ ভিত্তিহীন হতেই পারে, কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কেন তদন্ত করেনি বোর্ড। সোমবারেই তার জবাব চেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।