কলকাতা হাই কোর্ট
দিন দিন বেড়েই চলেছে মামলার সংখ্যা। কিন্তু সেই হারে হচ্ছে না মামলার নিষ্পত্তি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুনানিই শুরু হয়নি অনেক মামলার। কারণ একটাই। নেই পর্যাপ্ত সংখ্যক বিচারপতি। বর্তমানে এই সমস্যাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে।
ভারতে স্থাপিত প্রথম উচ্চ আদালতগুলির মধ্যে কলকাতা হাই কোর্ট অন্যতম। ১৮৬২ সালে তৈরি প্রাচীনতম এই উচ্চ আদালতটির ঐতিহ্য ও গরিমা রয়েছে দেশব্যাপী। কিন্তু বর্তমানে এখানে অর্ধেকেরও কম বিচারপতি নিয়ে কাজ চলছে। নিয়ম অনুসারে, কলকাতা হাই কোর্টে ৭২ জন বিচারপতি থাকার কথা। তার মধ্যে ৫৪ জন স্থায়ী এবং ১৮ জন অতিরিক্ত বিচারপতি থাকবেন। কিন্তু ২০২১ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত রয়েছেন মাত্র ৩১ জন বিচারপতি। তাঁদের মধ্যে ২৯ জন স্থায়ী এবং ২ জন অতিরিক্ত বিচারপতি। অর্থাৎ ৪১ জন বিচারপতির শূন্যপদ রয়েছে। শতাংশের হিসাবে যা ৫৬.৯।
আর এ নিয়েই বিচার কাজ চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। ফলে বিচারপতিদের উপর চাপও পড়ছে বেশি। এক আইনজীবী কথায়, ‘‘বিচারপতি কম থাকার জন্য বিচারের উপর তার প্রভাব পড়ছে। অনেক নতুন নতুন মামলা এলেও তা শুনানির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবার বিচারকের অভাবের জন্য মামলার নিষ্পত্তিও হচ্ছে কম। ফলে বিচারের আশায় প্রমাদ গোনা ছাড়া উপায় নেই সাধারণ মানুষের।’’
৩১ ডিসেম্বর কলকাতা হাই কোর্টে সর্বশেষ নিয়োগ করা হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয় রাজেশ বিন্দলকে। এর আগে জম্মু ও কাশ্মীর হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি। ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার বিচারপতি বিন্দলকে কলকাতা হাই কোর্টে নিয়ে আসেন। এ ছাড়া ওই বছর আরও একটি নিয়োগ হয়েছে। মে মাসে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন অনিরুদ্ধ রায়।
দেশের কোনও হাই কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ জন বিচারপতির নাম মোদী সরকারের কাছে সুপারিশ করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। তবে তাতে কোনও কাজ হয়নি। ওই নাম থেকে এখনও পর্যন্ত এক জনকেও কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করেনি কেন্দ্র।