কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে কলকাতা হাই কোর্টের এক মহিলা আইনজীবীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও ওই মৃত্যুর মামলায় খুনের ধারা যোগ করতে হাই কোর্টকেই হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।
এ বার মৃত আইনজীবীর মেয়েকে হুমকির অভিযোগ শুনে পুলিশের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বুধবার ওই মামলার শুনানিতে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পুলিশি নিরাপত্তার নির্দেশের পরেও কী ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে? পুলিশ কি আদৌ নিরাপত্তা দিচ্ছে?’’
প্রসঙ্গত, মৃত আইনজীবী কৃষ্ণা দাসমাইতির মেয়ে পিয়ালি মাইতি নিজেও হাই কোর্টের আইনজীবী। বিচারপতির নির্দেশ, মহেশতলার যে আবাসনে পিয়ালি থাকেন সেখানে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়াও, আগের নির্দেশ মতো মামলার প্রয়োজনে থানায় এবং ডায়মন্ড হারবার আদালতে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও পিয়ালির পুলিশি নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে। এ ব্যাপারে ডায়মন্ড হারবারের এসপির লিখিত জবাবও চেয়েছে কোর্ট।
আদালতের খবর, কুলপিতে মাইতি পরিবারের একটি দেবোত্তর সম্পত্তির দখল ঠেকাতে মামলা করেছিলেন পিয়ালির বাবা বাসবেন্দ্র মাইতি এবং মা কৃষ্ণা। গত ১২ অক্টোবর থানায় এফআইআর হয়। অভিযোগ, ১৯ অক্টোবর মাইতি পরিবারের উপরে হামলা হয় এবং তাতে গুরুতর আহত কৃষ্ণা হাসপাতালে মারা যান। পুলিশ প্রথমে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলা রুজু করে। অভিযোগ, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেও খুনের ধারা যুক্ত হয়নি।
পুলিশের দাবি, তদন্তকারী অফিসার খুনের ধারা যুক্ত করতে চাইলেও নিম্ন আদালতের বিচারক তা মঞ্জুর না করে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। বিষয়টি হাই কোর্টে গড়়ালে খুনের ধারা যুক্ত হয়। ওই ঘটনার পরে মাইতি পরিবারের বাকি সদস্যেরা কুলপি ছেড়ে মহেশতলায় চলে আসেন। এ দিন পিয়ালি বলেন, ‘‘মহেশতলায় আমাদের বাড়ি এসে হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেই ছবি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।’’
পিয়ালিকে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে এ দিন রাজ্যের কৌঁসুলি আপত্তি করেন। বিচারপতি বলেন, ‘‘এক জন আইনজীবী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরে খুন হয়েছেন। এখন তাঁর আইনজীবী-মেয়েকে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে! ফের যদি বিপদ হয় তা হলে কে দায় নেবে? পুলিশ সেই দায় নেবে?’’ কোর্টের পর্যবেক্ষণ, আদালত নিরাপত্তার নির্দেশের পরেও হুমকি মিলছে। তাই কেন নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, তা কার্যত স্পষ্ট। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।