মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সাধুদের নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার নিষ্পত্তি করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই মামলার হলফনামা দেখে মনে হয়নি এটা জনস্বার্থ মামলা হতে পারে। মামলাকারী চাইলে অন্য ভাবে মামলার অভিযোগ করতে পারেন।
সন্ন্যাসী সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহের সূত্রপাত গত ১৮ মে, আরামবাগে। সেখানে রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তৃতা করেছিলেন মমতা। বিশেষত, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজের নাম করে তিনি বলেছিলেন, “সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করে দেশটার সর্বনাশ করছে।”
নির্বাচনী আবহে সেই ‘ইস্যু’ হাতছাড়া করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর দল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর সাধু-সন্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতার দিকে একের পর এক নিশানা করেছিলেন মোদী। বিষয়টি নিয়ে সরব হন কার্তিক মহারাজও। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আইনি চিঠিও পাঠান তিনি। সম্মানহানির চেষ্টায় মুখ্যমন্ত্রী ‘অসত্য’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’ মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ওই সন্ন্যাসী। মমতার সেই মন্তব্যের জের শেষমেশ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তাঁর ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে গত মে মাসে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপেরও আর্জি জানিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কয়েক জন মহারাজ।