শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট।
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ত্যাগ করার পর বহু বার শাসক দলের নেতামন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। স্বচ্ছ তদন্ত হলে শাসক দলের বহু জনপ্রতিনিধিরই কারাবাস হবে বলেও সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছে, সারদা এবং নারদ তদন্তে শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন জেল থেকে লেখা চিঠিতে দাবি করেছিলেন, শুভেন্দু তাঁর কাছ থেকে ‘বেআইনি ভাবে’ টাকা নিয়েছেন। এই চিঠিকে সামনে রেখেই নন্দীগ্রামের বিধায়কের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল তৃণমূল। শুভেন্দু পাল্টা দাবি করেছিলেন, রাজনৈতিক চাপের মাধ্যমে সারদা-কর্তাকে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। সারদা-তদন্তে শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে সম্প্রতি একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি দায়ের করেছিলেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। বুধবার এই মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
সারদা-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর অভিযু্ক্তদের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের হয়েছিল, তাতে অন্য অনেক তৃণমূল নেতার সঙ্গে নাম ছিল তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীরও। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই যে তদন্ত চালাচ্ছে, তাতে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেফতারির সম্মুখীন হয়েছেন শাসক দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি। কিন্তু শুভেন্দুকে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
জনস্বার্থ মামলাটির শুনানির সময় আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার সওয়াল করেছিলেন, “সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন চিঠি লিখে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বেআইনি ভাবে টাকা নেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। তার পরেও এখনও অবধি সিবিআই বিরোধী দলনেতাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। অথচ এই একই মামলায় অন্য প্রভাবশালীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পাল্টা শুভেন্দুর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘প্রায় ন’বছর আগে ঘটনাটি ঘটেছে। অথচ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওই চিঠি লিখেছিলেন সুদীপ্ত। ফলে ওই চিঠির পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, দেখতে হবে।’’
সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী আদালতকে জানান, তদন্ত চলছে। তদন্তকারী সংস্থার আতশকাচের তলায় অনেকেই রয়েছেন। প্রয়োজনে সকলকে ডাকা হবে। মঙ্গলবার এই মামলাটির রায়দান স্থগিত রেখেছিল হাইকোর্ট। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলাটি খারিজ করে দিল উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।