ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তের আবেদন মেনে মহিলার সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি দিল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ধর্ষণের একটি মামলায় ‘নির্যাতিতা’র সন্তানের পিতৃত্ব পরীক্ষার আবেদন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। ওই মামলায় অভিযুক্তের আর্জিতে সম্মতি জানিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি শম্পা দত্ত। ‘নির্যাতিতা’র সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা (ডিএনএ প্যাটারনিটি টেস্ট) করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি দত্তের একক বেঞ্চ।
২০০৮ সালে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ‘নির্যাতিতা’র বাবার অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছেন অভিযুক্ত। সেই কারণে তাঁর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা রুজু করে পুলিশ। পরে সন্তানের জন্ম দেন নির্যাতিতা। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে অভিযুক্তের দাবি, তিনি ওই সন্তানের পিতা নন। মহিলার সঙ্গে তাঁর কোনও রকম সম্পর্ক ছিল না। এমনকি মহিলার অন্য এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলেও দাবি তাঁর। এমন অবস্থায় তাই ‘নির্যাতিতা’র সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করানোর জন্য আবেদন জানান অভিযুক্ত।
‘নির্যাতিতা’র সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার আর্জির শুনানির সময় শিশুর অধিকারের বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখে আদালত। এই নির্দিষ্ট মামলার ক্ষেত্রে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখেন বিচারপতি। অতীতে সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার প্রসঙ্গও নির্দেশনামায় উল্লেখ করেছে হাই কোর্ট। সব দিক বিবেচনা করে হাই কোর্ট শিশুর পিতৃত্ব পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে নিম্ন আদালতে মহিলা এবং তাঁর সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানান অভিযুক্ত। তবে সেই আবেদন নাকচ করে দেয় নিম্ন আদালত। মামলায় মহিলা নিজের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রাজিও হন। তবে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য অভিযুক্ত ওই পরীক্ষা করানোর কথা বলছেন বলে মনে করেন বিচারক।
পরে তা নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন কি না, তার প্রাথমিক প্রমাণ মিলতে পারে পিতৃত্ব পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ হলে। যদিও অভিযোগ প্রমাণ হতে আরও অন্য প্রমাণ প্রয়োজন। তবে পিতৃত্ব পরীক্ষা ‘নেগেটিভ’ হলে অভিযুক্তের দাবি জোরালো হবে। হাই কোর্ট আরও জানিয়েছে, শুধু মাত্র বিচারের জন্য নয়, অভিযুক্তের অধিকারের জন্যও তাঁর আবেদনে অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন।
তবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অভিযুক্তকে নিম্ন আদালতে ১ লাখ টাকা জমা রাখারও নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। নির্যাতিতার সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ এলে নির্যাতিতা এবং তাঁর সন্তানকে ওই টাকা দেওয়া হবে।