ছবি সংগৃহীত।
রাজ্যের সব বেসরকারি স্কুলের টিউশন ফি ২০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, গত আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০১৯-২০২০ সালে যে টিউশন ফি ছিল, তার ২০ শতাংশ কমাতে হবে। ২০ শতাংশ কম করার পরও যে সব অভিভাবক ওই ফি দিতে পারবেন না, তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য প্রমাণ-সহ কুড়ি শতাংশের বেশি ফি কমানোর আবেদন করতে পারবেন। স্কুল কর্তৃপক্ষকে তা বিবেচনাও করতে হবে।
এই রায়ের পরে বেসরকারি স্কুলগুলির একাংশ জানিয়েছে, এর ফলে স্কুল পরিচালনায় অসুবিধায় হবে। কারণ, অনলাইন ক্লাস হলেও শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মীদের বেতন এবং খরচ কমেনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবছে তারা।
কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, বেসরকারি স্কুলের কর্মীদের বেতন অনেক ক্ষেত্রেই কম। এই রায় পরোক্ষে তাঁদেরও আর্থিক সঙ্কটে ফেলতে পারে। কারণ, হাইকোর্টের রায়ে এও বলা হয়েছে যে, চলতি অর্থবর্ষে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক বা অন্য কর্মীদের বেতন বাড়ানো যাবে না। যদি কোনও স্কুল তা বাড়ায়, তা হলেও টিউশন ফি না-বাড়িয়েই তা করতে হবে।
আরও পড়ুন: লোকাল ট্রেন চালুর জন্য চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে
আরও পড়ুন: ভর্তি-নথি যাচাই ছাড়াই কেন চালু বৃত্তির পোর্টাল?
হাইকোর্ট জানিয়েছে, স্কুল না-খুললে ‘নন-অ্যাকাডেমিক ফি’ অর্থাৎ যে সব পরিষেবা ছাত্রছাত্রীরা ব্যবহার করছে না, সেগুলি মকুব করতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে কোনও অভিভাবক অসন্তুষ্ট হলে হাইকোর্ট নির্দিষ্ট তিন সদস্যের কমিটির কাছে তিনি আবেদন করতে পারবেন। এ দিন ওই তিন সদস্যের কমিটিও তৈরি করে দিয়েছে আদালত। হাইকোর্ট এ দিন জানিয়েছে, আর্থিক ভাবে দুর্বল যে সব অভিভাবক কুড়ি শতাংশের বেশি ফি মকুব করার আবেদন করবেন, তাঁদের বিষয়টি নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর সন্তানকে অনলাইন ক্লাস বা পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
আরও পড়ুন: এ বার দুর্গোৎসবের উদ্যোক্তাও বিজেপি
বিনীত রুইয়া নামে এক অভিভাবক ফি কমানো নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। ২১ জুলাই মামলার শুনানি শুরু হয়। মামলা চলাকালীন যাদবপুর বিশ্ববদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভানেত্রী গোপা দত্তকে নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করে দেয় হাইকোর্ট। ওই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে স্কুলগুলির ফি সংক্রান্ত কিছু অসঙ্গতির কথা বলা হয়। এ দিন ইউনাইটেড গার্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে অভিভাবকেরা যে দাবি তুলেছিলেন, হাইকোর্টের এ দিনের রায় তাকেই মান্যতা দিল।”