কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ মামলায় আপাতত আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে-র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা করতে পারবে না সিআইডি। ওই নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা করার আর্জি নিয়ে রাজ্য সরকার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। শুক্রবার সেই আর্জি মঞ্জুর করেননি বিচারপতি শুভেন্দু সামন্ত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় প্রতাপচন্দ্রের কণ্ঠস্বর নেওয়ার আদৌ প্রয়োজন আছে কি না, তা আদালতের বিচারাধীন। তাই নমুনা সংগ্রহের অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিলে মূল মামলাই অসার হয়ে যাবে। কোর্টের নির্দেশ, রাজ্যের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদী পক্ষ আট সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দেবে। তার দু’সপ্তাহের মধ্যে পাল্টা হলফনামা দেবে রাজ্য। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে কোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। ২০ জুন পরবর্তী শুনানি।
আদালতের খবর, সল্টলেকের একটি সম্পত্তি সংক্রান্ত পারিবারিক বিবাদ আছে। তার এক পক্ষ তদন্তে ‘অখুশি’ হয়ে সটান পুলিশের বিরুদ্ধে শীর্ষ কোর্টে অভিযোগ করে, আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র তদন্তকারীদের প্রভাবিত করছেন। প্রতাপচন্দ্রের স্ত্রী কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। সেই পরিচয় কাজে লাগিয়েই প্রভাব খাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে। রাজ্য সিআইডিকে তদন্ত করতে দেয় এবং সিআইডি প্রতাপচন্দ্রকে সাক্ষী হিসেবে তলব করে দু’দিনে প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার পরেই প্রতাপ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন যে, সিআইডি তাঁকে নির্যাতন করেছে এবং বিচারপতি স্ত্রীর নামে অসত্য বয়ান দিতে চাপ দিয়েছে।
আদালতের খবর, নিম্ন আদালত প্রথমে প্রতাপচন্দ্রের বক্তব্য না শুনেই কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছিল। কোর্টে প্রতাপের আইনজীবী জানান, তাঁর অনুমতি ছাড়া ওই নির্দেশ দেওয়া যায় না। সেই যুক্তি মেনে নিম্ন আদালত জানায়, নমুনা নেওয়া যাবে না। রাজ্য তার বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আসে। এই মামলায় মূল বিবাদী পক্ষ উৎপল মজুমদারের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল জানান, প্রতাপ মামলায় অভিযুক্ত নন, সাক্ষী। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। তা ছাড়া, এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছে যে, পরিবারের মধ্যে আপস-মীমাংসা সম্ভব কি না? সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার তৎপর হয়ে সাক্ষীর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছে কেন সেটাও বড় প্রশ্ন।