কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘পর্ষদ যা করেছে সব শুনে দিনের শেষে বলা যায়, ক্লাসে শিক্ষক নয়, যেন ক্লাসটেস্ট পরীক্ষা নিয়েছে। এটা একটা নিয়োগ প্রক্রিয়া?’ বিচারপতি তালুকদারের মন্তব্য, ‘‘নিয়ম যে মানা হয়নি তা তো বোঝাই যাচ্ছে। এখন আপনারা কি মনে করেন না যে, তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে? কে তদন্ত করবে সেটা আলোচনার বিষয় হতে পারে।’’
টেটের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। মঙ্গলবার আদলতে পর্ষদের পক্ষে জানানো হয়, প্রশ্ন ভুল থাকার দরুন চাকরিপ্রার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে এক নম্বর করে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আবেদন করেননি, তাঁদের দেওয়া হয়নি। পর্যদের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি তালুকদারের মন্তব্য, ‘‘তা হলে বলতে হবে, আপনার মনে হল কিছু ব্যক্তিকে আপনি এক নম্বর দেবেন, আর সেটা দিলেও দিলেন! এটা কি ক্লাসটেস্ট পরীক্ষা নাকি, মনে হল ছাত্রদের এক নম্বর দিতে হবে, দিয়ে দিলাম।’’
এই মামলায় তদন্ত বা অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে মনে করেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা। বিচারপতি তালুকদারের পর্যবেক্ষণ, ‘‘পর্যদের আচরণ অপরাধমূলক ছিল কি না, সেটা পরের কথা। কিন্তু এখন কোনও না কোনও সংস্থাকে দিয়ে তো অনুসন্ধান করতেই হবে। পর্যদ নিজেরাই নিজেদের অনিয়মের তদন্ত করবে সেটা তো হতে পারে না!’’ মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার ফের মামলাটি শুনবে ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রাথমিকের অন্য একটি জনস্বার্থ মামলায় মঙ্গলবার রায় ঘোষণা স্থগিত রাখে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই মামলায় মামলাকারী অভিযোগ তুলেছেন, তৃণমূল নেতাদের সুপারিশের ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবী প্রধান বিচারপতির কাছে কয়েকটি সুপারিশপত্রের প্রতিলিপি জমাও দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।