— প্রতীকী ছবি।
আইআইটি খড়্গপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় কে জয়রামণের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, ওই ঘটনায় নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কে জয়রামণের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে থাকবেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড দফতরের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং সিআইডি-র অফিসারেরা। মৃত্যুর রহস্য খুঁজতে বা খুনের কিনারা করতে এই কমিটি নার্কো টেস্ট করাতে পারবে। ১৪ জুলাই রিপোর্ট দেবে এই তদন্তকারী দল।
বুধবার মৃত ছাত্রের পরিবার আদালতের কাছে অভিযোগ জানায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং প্রথম ময়নাতদন্তকারী অফিসার তথ্য বিকৃত করে নথি লোপাটের চেষ্টা করেছেন। পরিবারের আর্জি, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেওয়া হোক। বিচারপতি মান্থা জানান, আদালত এখনই এ বিষয়ে কোনও মতামত দেবে না। নতুন তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।
পরিবারের দাবি, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের পর ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও দেহ এখনও অসমে পাঠায়নি রাজ্য। এ নিয়ে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন রাজ্যের এমন ব্যবহার? রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হোক। হাই কোর্ট জানায়, এ সবের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে চলুক। আদালতের নির্দেশ, রাজ্যকে অবিলম্বে অসমে নিয়ে গিয়ে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে।
বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘‘আপাতত এই ঘটনায় আংশিক ভাবে হলেও আইআইটি কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত মনে করছে আদালত। তাই চার্জশিট পেশের আগে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কর্তৃপক্ষকে দেওয়া যাবে না।’’
গত বছর ১৪ অক্টোবর খড়্গপুর আইআইটি-র হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় অসমের বাসিন্দা বিটেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ফাইজ়ানের ঝুলন্ত দেহ। পরিবারের অভিযোগ ছিল, তাঁকে খুন করা হয়েছে। এ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যেরা। ফাইজ়ান আত্মহত্যা করেছেন না কি তাঁকে খুন করা হয়েছে— তা খতিয়ে দেখতে হাই কোর্টের নির্দেশে তৈরি করা হয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই কমিটির রিপোর্টে উঠে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। রিপোর্টে বলা হয়, ওই ছাত্রের মাথার পিছনের দিকে ভারী কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তার চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল ওই রিপোর্টে। ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি দাবি করে, পুলিশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আঘাত লাগার বিষয়টি ছিল না। তার পরেই নতুন কমিটি তৈরি করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার দিন স্থির করে দিল আদালত।