বিচারপতি মান্থার এজলাসে শুনানির জন্য উপস্থিত হননি রাজ্যের অনেক আইনজীবী। থমকে গিয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানির কাজ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবীদের একাংশের বিক্ষোভের ঘটনায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আগেই আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন। এ বার ওই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। শুক্রবার তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ তৈরি হয়েছে হাই কোর্টে। ওই বেঞ্চই স্বতঃপ্রণোদিত আদালত অবমাননার বিচার করবে। বিশেষ বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ। শীঘ্রই তাঁদের বেঞ্চে উঠবে আদালত অবমাননার মামলাটি।
গত সোমবার বিচারপতি মান্থার এজলাস অবরোধ এবং বয়কট করেন আইনজীবীদের একাংশ। পরে অবরোধ উঠলেও বয়কট চলে। শুক্রবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিচারপতি মান্থার এজলাসে শুনানির জন্য উপস্থিত হননি রাজ্যের অনেক আইনজীবী। ফলে থমকে গিয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানির কাজ। এ নিয়ে সরব হন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এজলাসে আইনজীবীদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার ঘটনায় আদালত অবমাননা এবং স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণের জন্য কোর্টের কাছে আর্জি জানান তিনি। ওই আর্জিতে সাড়া দেন বিচারপতি মান্থা। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণের পাশাপাশি আদালত অবমাননার রুল জারি হয়। বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, আদালত কক্ষ অবরোধ করে বিচার করতে না দেওয়া অপরাধের সমতুল্য। কারণ, এর ফলে বিচারব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আদালত অবমাননার রুল জারি করলেও নির্দেশনামায় নির্দিষ্ট কোনও আইনজীবীর নাম উল্লেখ করেননি বিচারপতি মান্থা। তিনি হাই কোর্টের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিক্ষোভকারীদের শনাক্ত করতে বলেছেন। পরে বিচারপতি মান্থার স্বতঃপ্রণোদিত এই মামলাটি পাঠানো হয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের কাছে। অন্য দিকে, হাই কোর্টের ওই ঘটনায় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অনেক বর্ষীয়ান আইনজীবী। তখনই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। এর পরই শুক্রবার হাই কোর্টের তিন বর্ষীয়ান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত হল বিশেষ বেঞ্চ। এখন এই বেঞ্চই বিচারপতি মান্থার আদালত অবমাননার রায়ের বিচার করবে।