রাজ্যের বেশ কয়েকটি খনি এবং কারখানা চত্বরে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে বলে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল আদালতে। ফাইল চিত্র।
খনি এলাকায় বা কোনও কোনও কারখানা চত্বরে ফুসফুসের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে— এমনই অভিযোগে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। মঙ্গলবার রাজ্যের কাছে তার জবাব চাইল আদালত। বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, এই সমস্ত এলাকার বাসিন্দা এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য কী কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। যে নিয়ম ইতিমধ্যেই বলবৎ ছিল, তা-ও কি মানা হয়েছে?
বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সিমেন্ট কারখানা, কয়লা খাদান, পাথর খাদান, এমনকি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকেরাও ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। ওই ফুসফুসের ব্যাধির নাম সিলিকোসিস। যা সাধারণত নিশ্বাসের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে ক্রিস্টালিন সিলিকার ধুলো শরীরে প্রবেশ করলে হয়। এই ধরনের ধুলো সাধারণ খনি এবং কারখানা চত্বরে দেখা যায়। তাই ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দা এবং শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল 'শান্তি গণতান্ত্রিক সংহতি মঞ্চ' নামে একটি সংগঠন। মামলায় শ্রমিকদের পুনর্বাসনেরও দাবি জানিয়েছিল তারা। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি ছিল হাই কোর্টে। হাই কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ৯ মে তারিখের মধ্যে রাজ্যকে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে।
মামলকারীদের আইনজীবী শামিম আহমেদ জানান, এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম-সহ রাজ্যের কয়েকটি জেলায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং তাঁদের পুনর্বাসনের দাবিও জানানো হচ্ছে। এ নিয়ে রাজ্য নির্দেশিকা (গাইডলাইন) তৈরি করলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি।
মঙ্গলবার মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পর হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, রাজ্যকে জানাতে হবে সিমেন্ট কারখানা, কয়লা খাদান, পাথর খাদান, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র-সহ যে সমস্ত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা এই রোগে আক্রান্ত হন, সেই সব কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রিপোর্টে এ-কথাও উল্লেখ করতে হবে, ২০২১ সালে এ বিষয়ে যে নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছিল, তা এখন কী অবস্থায় রয়েছে।