এসএসকেএমের সামনে লালবাতি লাগানো অনুব্রতের সেই গাড়ি। এই গাড়ি নিয়েই মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। ছবি: পিটিআই।
অনুব্রত মণ্ডলের গাড়িতে লালবাতি কেন, এই প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। আদালত সেই মামলায় রাজ্যের কাছেই জবাব চাইল। হাই কোর্ট রাজ্যের কাছে জানতে চাইল, এই সব লাল-নীল বাতি লাগানো গাড়ি কি বৈধ? আগামী সোমবারের মধ্যে জবাব নিয়ে রাজ্যকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
হাই কোর্টে অনুব্রতের গাড়িতে লালবাতির ব্যবহারের মামলাটি রুজু হয়েছিল বেশ কিছু দিন আগেই। রাজনৈতিক দলের একটি জেলার সভাপতি হয়ে অনুব্রত নিজের গাড়িতে লালবাতির ব্যবহার করেন কী করে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেই হাই কোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। মামলাটি করেছিলেন এক আইনজীবী। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেখানে নিজের গাড়িতে লাল বা নীলবাতির ব্যবহার করেন না, এমনকি কোনও মন্ত্রীও এ ধরনের গাড়ি চড়েন না, সেখানে তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত সেই অনুমতি পান কী করে? মামলাটিতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল, অনুব্রত লালবাতি দেওয়া গাড়ি ব্যবহার করছেন জেনেও কেন পদক্ষেপ করা হয়নি তাঁর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সেই সব অভিযোগের জের টেনেই রাজ্যের কাছে আদালত জানতে চেয়েছে, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গাড়িতে যে লালবাতি, নীলবাতির ব্যবহার চোখে পড়ে, সব কি বৈধ? রাজ্য জুড়ে লালবাতি নীলবাতি লাগানো গাড়ির ব্যবহার কেন হচ্ছে?’’
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলেই অনুব্রতের গাড়িতে লালবাতির ব্যবহার নিয়ে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলাটি। সিবিআইয়ের তলব পেয়ে গত ৬ এপ্রিল অনুব্রত বীরভূম থেকে একটি লালবাতি দেওয়া গাড়িতে কলকাতায় এসেছিলেন। তার পর অবশ্য সিবিআইয়ের দফতরে না গিয়ে চলে গিয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। এর পরই আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি এ নিয়ে মামলা করেন। প্রশ্ন তোলেন, বীরভূম থেকে কলকাতা পর্যন্ত ওই গাড়ি ব্যবহার করে এলেন অনুব্রত। অথচ জেলার পুলিশ প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিল না? মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে বলেছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ ধারা অনুযায়ী এই ধরনের গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করে আইনি পদক্ষেপ করার কথা। তা হলে রাজ্যে এমন কতগুলি মামলা হয়েছে? রাজ্যে মাল্টিকালার বাতি চালু আছে কি না, তা নিয়েও রাজ্যকে প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি। এই সব প্রশ্নেরই উত্তর আগামী সোমবারের মধ্যে আদালতে জানাতে হবে রাজ্যকে।