গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কুন্তল ঘোষকে আর কত দিন জেলে থাকতে হবে? নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা সম্পর্কে সিবিআইয়ের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে একাধিক বার জামিনের আবেদন করেছিলেন কুন্তল। কিন্তু সিবিআই সেই জামিনের বার বার বিরোধিতা করেছে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। তখনই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির কাছে বিচারপতি বাগচী জানতে চান, কত দিন জেলে থাকতে হবে কুন্তলকে?
শুধু তাই-ই নয়, সিবিআইকে বিচারপতি বাগচী আরও প্রশ্ন করেন, এক বছরেরও বেশি সময় জেলে রয়েছেন কুন্তল। কবে তিনি জামিন পাবেন? তখন সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী আদালতে জানান, এক বছর তিন মাস জেলে। প্রায় দু’বছর চলছে তদন্ত। চার কোটি টাকা তোলা হয়। কুন্তল নিজেই ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন। ভুয়ো ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল সরকারি অফিসে। প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের কসবার অফিসে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল। কারা নিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। কুন্তল ছাড়াও নীলাদ্রি ঘোষ এবং তাপস মণ্ডল এজেন্ট ছিলেন।
এর ভিত্তিতেই বিচারপতি বাগচীর পাল্টা প্রশ্ন, যা অপরাধ তাতে বড়জোর দশ বছর কারাদণ্ড হবে। এক বছর পার হয়ে গিয়েছে। এঁদের আর কত দিন জেল খাটতে হবে? এ প্রসঙ্গে সিবিআই আশঙ্কা প্রকাশ করে, কুন্তল ছাড়া পেলে প্রমাণ নষ্ট হতে পারে। এই দুর্নীতিতে তিনি সেতু হিসাবে কাজ করেছেন। কিন্তু সিবিআইয়ের এই উত্তরে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। তিনি জানান, আদালত এই মামলার স্টেটাস জানতে চায়। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন কুন্তল, এমন কত জনকে শনাক্ত করেছে সিবিআই? কত জনের সম্পূর্ণ বেআইনি নিয়োগ হয়েছে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত মঙ্গলবার সিবিআইয়ের কাছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের রিপোর্ট তলব করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সে দিন আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এ-ও দাবি করেছিল, টেট-এ ফেল করেছেন, এমন প্রার্থীদের যোগ্য প্রমাণ করতে ভুয়ো ওয়েবসাইটও তৈরি করেছিলেন তাপস-কুন্তলেরা। অবিকল আসল ওয়েবসাইটের মতো দেখতে ছিল সেই ভুয়ো ওয়েবসাইট। এমনকি, দুর্নীতি যাতে নজর এড়িয়ে যায়, সে জন্য অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের ভুয়ো ইমেল আইডি থেকে মেল পাঠিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডেকে পাঠানো হত। কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ওএমআর শিট মূল্যায়নের দায়িত্ব ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’কে দেওয়া হয়েছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে সিবিআই।