মেনকা গম্ভীর।
ব্যাঙ্কক যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে আটকানোর ঘটনায় আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীর। শুক্রবার সেই মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। মেনকার আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্যকে সেই নোটিস পাঠাতে বলেছেন বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের বেঞ্চ। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ইডি যে হেতু এই মামলায় একটি পক্ষ, তাই তাদের বক্তব্য না শুনে কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। যার অর্থ, পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বিদেশযাত্রা করতে পারবেন না মেনকা।
গত শনিবার ব্যাঙ্কক যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে মেনকাকে আটকায় অভিবাসন দফতর। সেই রাতেই বিমানবন্দরে পৌঁছে সোমবার হাজিরা দেওয়ার জন্য মেনকার হাতে নোটিস ধরিয়ে দেয় ইডি। তদন্তকারী সংস্থার ধরানো সেই নোটিসে সময় নিয়ে বিভ্রান্তির জেরে গভীর রাতে ইডির বন্ধ দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন মেনকা। সোমবার সকালে ভুল সংশোধন করে পুনরায় একটি নোটিস পাঠানো হয় ইডির তরফে। সেই ভিত্তিতে ওই দিন দুপুর ইডি দফতরে গিয়ে তদন্তকারীদের মুখোমুখি হন মেনকা। ওই ইডি হাজিরার পরেই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্টে মেনকার আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, আদালতের ‘রক্ষাকবচ’ থাকা সত্ত্বেও মেনকাকে আটকানো হয়। এতে আদালত অবমাননা হয়েছে।
শুক্রবার মেনকার দায়ের করা সেই মামলা গ্রহণ করেছেন বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য। আদালতে অভিষেক-শ্যালিকার আইনজীবী জানান, হাই কোর্ট আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, মেনকার বিরুদ্ধে কোনও ‘কড়া পদক্ষেপ’ করা যাবে না। তা সত্ত্বেও তাঁকে ব্যাঙ্কক যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। অয়ন জানান, মেনকার মা অসুস্থ। তিনি ব্যাঙ্ককে থাকেন। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়েই তিনি সেখানে যাচ্ছিলেন। যদিও বিচারপতি মেনকার বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’-এর যুক্তি মানতে চাননি। তিনি জানান, এটাকে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’ বলা যায় না। বরং, ‘হয়রানি’ বলা যেতে পারে।
এর পরেই এই মামলার নোটিস ইডিকে পাঠানোর জন্য মেনকার আইনজীবীকে নির্দেশ দেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট পক্ষের বক্তব্য না শুনে এখনও কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়।’’
বস্তুত, কয়লা পাচার মামলায় ইডি দিল্লিতে তলব করায় আগেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মেনকা। দিল্লির বদলে কলকাতায় ইডির মুখোমুখি হতে চান এবং তাঁকে যেন গ্রেফতার করা না-হয়, এই আর্জি কোর্টে জানান তিনি। তার প্রেক্ষিতে বিচারপতি ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে মেনকাকে এবং এফআইআরে নাম না থাকায় তাঁকে আপাতত গ্রেফতার করা যাবে না।