—প্রতীকী ছবি।
এক দফায় দেশের ১৬ জন হাই কোর্টের বিচারপতির বদল দেখা গিয়েছিল ১৯৭৫ সালে। তার পরে এত বছর বাদে এ বার এক দফায় ২৪ জন হাই কোর্টের বিচারপতিকে বদল করেছে দেশের শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম। সেই তালিকায় আছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীও। সোমবার দেশের প্রাচীনতম হাই কোর্ট থেকে বিদায়ী বক্তৃতায় সেই তথ্যই তুলে ধরলেন তিনি। বিচারপতি চৌধুরী কলকাতা থেকে পটনা হাই কোর্টে বদলি হয়েছেন। এ দিন তাঁর বক্তৃতার পরে আইনজীবীদের একাংশ অবশ্য ঘনিষ্ঠদের মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১৯৭৫ সাল দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্যই ‘কুখ্যাত’।
বিচারপতিদের বদলি-ব্যবস্থা নিয়ে এ দিন নিজের মতামতও ব্যক্ত করেছেন বিচারপতি চৌধুরী। তাঁর মতে, বিচারপতিদের বদলি করার অনুমোদন সংবিধানে আছে। কোনও হাই কোর্টে কত শতাংশ ভিন্ রাজ্যের বিচারপতি থাকবেন, সে ব্যাপারে সরকারি নিয়মও আছে। কিন্তু এই বদলি বিচারের কাজে কোথাও ‘বিঘ্ন’ ঘটায় কি না, সেই প্রশ্নও কার্যত তাঁর বক্তৃতায় উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ২৪ নভেম্বর পটনা হাই কোর্টে দায়িত্বভার গ্রহণ করব। তার পরেই ২৫, ২৬, ২৭ নভেম্বর ছুটি থাকায় ফিরে আসব। পরিবারকে পটনায় রাখার ব্যবস্থা করার জন্য চার দিন ছুটি নিতে হবে। এর ফলে বিচারের যে দায়িত্ব, তা আমি ঠিক মতো পালন করতে পারব না।’’ এর থেকে বিচারপতিরা নিজেদের রাজ্যেই বিচারের দায়িত্ব পালন করলে ভাল হয় কি না, সেই প্রশ্নও কার্যত তাঁর বক্তৃতায় উঠে এসেছে।
বিচারপতি বিবেক চৌধুরী কলকাতা হাই কোর্টে দায়িত্ব গ্রহণের আগে ১৯৯১ সাল থেকে নিম্ন আদালতের বিচারক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। হাই কোর্টের প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলেছেন। এ দিন বিদায়লগ্নে হাই কোর্টের একটি রীতি বদল নিয়েও আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। তিনি বলেন, ‘‘নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি সংক্রান্ত কমিটিতে আগে হাই কোর্টের সব থেকে সিনিয়র সার্ভিস জজকে (যাঁরা নিম্ন আদালত থেকে পদোন্নতি পেয়ে বিচারপতি হয়েছেন) রাখা হত। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের সময় থেকে সেই রীতি বদলে গিয়েছে। কমিটিতে রাখতেই হবে এমন আইন নেই ঠিকই। আসলে এই রীতি কোথাও দীর্ঘদিনের কাজের স্বীকৃতি ছিল।’’