প্রতীকী ছবি।
মার্চ মাসের আগেই বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত বিছানো রেললাইন, হলদিবাড়ি এবং জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের পরিকাঠামো সম্প্রসারণের যাবতীয় কাজ শেষ করতে বলল রেল। আগামী মার্চের প্রথমে সব কাজ বুঝে নেবে রেল। বাংলাদেশ রেলের তরফে জানানো হয়েছে, জুলাই মাসের মধ্যে সে দেশের চিহালাটি রেল স্টেশন থেকে ভারতের সীমান্ত পর্যন্ত রেল লাইন পাতার কাজ শেষ হয়ে যাবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী স্বাধীনতা দিবসের কাছাকাছি সময় থেকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি হয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ফের রেল যোগাযোগ শুরু হবে। প্রথমে মালগাড়ি চলবে।
এই লাইন চালু হলে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন হবে অন্যতম ‘বেস স্টেশন।’ এই স্টেশন থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো হবে। রেলগাড়িতে ওয়াগন জোড়া হবে এই স্টেশন থেকেই। সে কারণে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জলপাইগুড়ি স্টেশনে দুটি নতুন রেললাইন বসানো এবং দুটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি-সম্প্রসারণের কাজ চলছে। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দের কথায়, “বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত রেল লাইন বসানোর প্রাথমিক কাজটুকু হয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশের পরিকাঠামো সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। সীমান্তের দিকেও কিছু কাজ চলছে। সেগুলি সবই ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। পুরো পরিকাঠামো মার্চে তৈরি হয়ে যাবে।”
তার পরে অপেক্ষা বাংলাদেশের দিকে পরিকাঠামো কবে শেষ হবে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রের খবর, বাংলাদেশের দিকেও সীমান্ত পর্যন্ত রেল লাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছে। চিলাহাটি স্টেশন থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার লাইন পাতবে বাংলাদেশ। সঙ্গে ২ কিলোমিটারের লুপ লাইনও পাতছে বাংলাদেশ। তার জন্য প্রায় ৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ করে গত সেপ্টেম্বরে শিলান্যাসও করেছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ রেল থেকে জানিয়েছে জুন মাসের মাঝামাঝি তাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তারপর মাসখানেক মহড়া চালাবে। জুলাই মাসে দুই দেশের যৌথ মহড়ার কথাও রয়েছে। হলদিবাড়ি এবং জলপাইগুড়ির দিকে কাজ বাকি রয়েছে মূলত বৈদ্যুতিন সিগন্যালের। রেল জানিয়েছে মাটির নীচে তার পাতা হয়ে গিয়েছে। সিগন্যাল পোস্টও বসানো হয়েছে। চিলাহাটি থেকে বাংলাদেশের ট্রেন হলদিবাড়ি ঢুকে প্রথমে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে এসে থামবে। এই স্টেশনে মাল ওঠানো-নামানোর পরিকাঠামো থাকবে। কামরা কেটে নেওয়াও হবে। রেলের রেক রাখার পরিকাঠামো থাকবে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা হাবও তৈরি হচ্ছে জলপাইগুড়িতে। যেই পরিকাঠামো তৈরির জন্য স্টেশনের আশেপাশ থেকে বাড়ি, গুমটিঘর উচ্ছেদ করেছে রেল।
বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে এই পথেই এক সময়ে দার্জিলিং মেল চলাচল করত। দেশভাগের পরেও এই লাইনে বিভিন্ন ট্রেন চলত। ষাটের দশকে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিতীয় যুদ্ধের পরে লাইনটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন সেই ট্রেন-যোগের দিকে তাকিয়ে উত্তর।