—ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি যুক্তদের তো বটেই, এমনকি যারা নির্বাচনের কাজে যুক্ত নন— প্রয়োজনে এমন আমলাদেরও বদলি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোড়া।
সাধারণত আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ হওয়ার পরে সরাসরি ভোটের কাজের সঙ্গে যুক্ত আমলাদেরই শুধু বদলি করে থাকে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আসন্ন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে, ভোটের কাজে সরাসরি যুক্ত নন, এমন আমলার বিরুদ্ধে স্বজণপোষণ বা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সুবিধে দেওয়ার অভিযোগ উঠলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কমিশন পিছপা হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুনীল অরোড়া। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, যদি কোনও আমলার কাজে নিরপেক্ষতা না-থাকে তা হলে সেই আমলাকে বদলি করার অধিকার কমিশনের রয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের সময় একটি রাজ্যের ডিজি (ইনটেলিজেন্স)-কে পদ থেকে সরিয়ে দেয় কমিশন। কমিশনের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যায় সংশ্লিষ্ট রাজ্য। রাজ্যের যুক্তি ছিল ওই আমলা নির্বাচন সংক্রান্ত দৈনন্দিন কাজে যুক্ত নন। তাই তাঁকে বদলি করার অধিকার নেই কমিশনের। অরোড়ার দাবি, পাল্টা যুক্তিতে কমিশন হাইকোর্টকে জানায়, ওই ব্যক্তি নিরপেক্ষ নন, পক্ষপাতদুষ্ট। সেই প্রমাণ কমিশনের কাছে রয়েছে। তাই নিরপেক্ষ ভোটের স্বার্থেই ওই আমলাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিশনের সেই যুক্তি মেনে নেয় হাইকোর্ট।
আইপিএস সুরজিৎ পুরকায়স্থ, রিনা মিত্রের মতো আমলারা অবসরের পরেই ফের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশাসনে যোগ দিয়েছেন। অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের নিরপক্ষেতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। বিজেপির অভিযোগ, খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ কাজে যোগ দেওয়া ওই আমলাদের অধিকাংশই নিরপেক্ষ নন। তাঁদের আনুগত্য জনগণের প্রতি নয়, শাসক দলের প্রতি। ওই আমলারা ক্ষমতায় থাকলে নিরপেক্ষ ভাবে ভোটের কাজ করা যাবে না। তাই পশ্চিমবঙ্গে অবিলম্বে আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ করার দাবি তুলেছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, একটি রাজনৈতিক দলের দাবি হল পশ্চিমবঙ্গের গোটা প্রশাসন শাসক শিবিরের নির্দেশ মেনে চলছে। প্রত্যেক রাজ্যেই কিছু ব্যতিক্রম থাকে, কিন্তু তা বলে আমরা গোটা প্রশাসনের সকলকে অবিশ্বাস করতে পারি না। তা ছাড়া এদের মাধ্যমেই কমিশনকে ভোট করাতে হবে। অতীতে লোকসভা নির্বাচনের সময়ে একটি রাজ্যের মুখ্যসচিব, এক জন অতিরিক্ত ডিজি, পাঁচ জন পুলিশ কমিশনারকে অন্যত্র বদলি করার নির্দেশ দেয় কমিশন। অরোড়ার দাবি, স্বজণপোষণের অভিযোগ ওঠার কারণেই ওই আমলাদের সে সময়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসন্ন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে কোনও আমলার বিরুদ্ধে এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে কমিশন সক্রিয় হবে, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।