ভেঙে পড়া অংশ। নিজস্ব চিত্র।
হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বর্ধমান স্টেশনের মূল ভবনের একাংশ। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে ভর্তি করা হয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে এক জনের নাম হোপনা টুডু। তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। অন্য জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে ভর্তি করা হয়েছে। চাঙড় ভেঙে তার চোখ মুখ নাক থেঁতলে গিয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল, পুলিশ এবং জিআরপিএফ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাত সওয়া আটটা নাগাদ আচমকাই স্টেশনের মাঝের অংশের বেশ কিছুটা জায়গা ভেঙে পড়ে। ভবনের এই অংশেই রয়েছে টিকিট কাউন্টার এবং স্টেশনের মূল প্রবেশপথ। সে সময় স্টেশন চত্বর যাত্রীদের ভিড় ছিল। আচমকাই বিশাল শব্দ করে স্টেশনের একাংশ ভেঙে পড়ায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভবনটি ভেঙে পড়ার আগে একটা বিকট শব্দ হয়। ভবনের কাচগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করে। তা দেখেই লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আওয়াজ পেয়েই ভবনের ওই অংশে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই বেরিয়ে আসেন। তার পরই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ভবনের একাংশ। অনেকের আটকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন।
প্রতি দিনের মতোই এ দিনও অফিস থেকে ফিরছিলেন দীপ্তিমান কর। ঘটনার ঠিক আগেই বর্ধমান স্টেশনে নামেন। তিনি বলেন, “ট্রেন থেকে নেমে সবে স্টেশন থেকে বেরিয়েছি, তখনই একটা বিকট শব্দ শুনতে পাই। ঘুরে দেখি স্টেশনের মূল ভবনের একাংশ ভেঙে পড়েছে। আতঙ্কে চার দিকে লোকজন ছোটাছুটি করছেন।” তিনি আরও জানান, ওই সময়ে টিকিট কাউন্টার এবং এনকোয়্যারির সামনে প্রচুর যাত্রী থাকেন। এ দিনও ছিল। যখন ঘটনাটি ঘটে তখনও বহু যাত্রী সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁর দাবি, আচমকাই ভেঙে পড়ার ফলে অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন।
হেল্পলাইন নম্বর
০৩৩-২৬৪১১৬৬১
০৩৩-২৬৪১৩৬৬০
০৩৩-২৬৪০২২৪১
০৩৩-২৬৪০২২৪২
০৩৩-২৬৪০২২৪৩
যদিও ডিআরএম (হাওড়া) ঈশা খান জানিয়েছেন, এক জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভেঙে পড়া অংশে কেউ আটকে নেই। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্ল্যাটফর্ম অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। ফলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। অন্য রাস্তা দিয়ে পল্যাটফর্মে ঢোকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: টাইগার হিলে বরফ, দার্জিলিং থেকে স্পষ্ট দেখা গেল কাঞ্চনজঙ্ঘা
রেল সূত্রে খবর, জেসিবি এনে ভবনের ভাঙা অংশ সরানোর কাজ চলছে। ভিতরে কেউ আটকে আছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন রেলের ইঞ্জিনিয়াররাও। ভবনটিকে খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, “দু’জনের জখম হওয়ার খবর রয়েছে। তাঁদের প্রাণহানি কোনও আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা।”
প্রাথমিক তদন্তের পর রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্ধমান স্টেশনের এই ভবনটি বহু পুরনো। ট্রেন চলাচলের ফলে যে কম্পন তৈরি হয়, মনে করা হচ্ছে তাতেই ভবনটির কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ফলেই এ দিন ভেঙে পড়ে ভবনের ওই অংশ। রেল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, স্টেশনে মেরামতের কাজ চলছিল। কী ভাবে ঘটনাটা ঘটল তা খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।