—প্রতীকী ছবি।
বাজেটে মধ্যবিত্ত ও চাষিদের জন্য কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের জন্য প্রায় কিছুই নেই, শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের অন্তর্বর্তী বাজেট পেশের পরে এমনই প্রতিক্রিয়া জেলার সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের। তবে সেই সঙ্গে তাঁদের ধারণা, মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বাড়তে পারে। ফলে শিল্পোদ্যোগীরা উপকৃত হতে পারেন বলে মনে করছেন জেলার বণিকসভাগুলি।
দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ বণিক সংগঠন ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের কার্যকরী সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের দাবি, বাজেটে ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের জন্য বিশেষ কোনও ইতিবাচক দিশার উল্লেখ নেই। ফলে শিল্পাঞ্চলের উপরে বাজেটের তেমন ইতিবাচক প্রভাবও নেই। তবে রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবুর সংযোজন, ‘‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের জন্য আবেদনের মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তা ভাল।’’
যদিও শিল্পপতিদের একাংশের দাবি, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময়েই ব্যাঙ্ক-হয়রানির মুখে পড়তে হয়। তা আগে বন্ধ হওয়া দরকার বলে মনে করছেন জেলার নানা প্রান্তের শিল্পোদ্যোগীরা।
শিল্পে ‘প্রত্যক্ষ ইতিবাচক’ কোনও প্রস্তাবের কথা না বলা হলেও ‘মধ্যবিত্ত-মুখী’ বাজেটে তাঁরা উপকৃত হতে পারেন বলে মনে করছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা চেম্বার অব কমার্সের কর্ণধার পবন গুটগুটিয়া। তাঁর কথায়, ‘‘মধ্যবিত্তদের জন্য কর সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলি হয়তো ভাল। তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে বাজারে গতি আসবে। লাভবান হবেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোগীরাও।’’ সেই সঙ্গে পবনবাবুরা আরও জানান, বাজেটে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলি নিয়ে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ করার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু কী পদক্ষেপ, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে তাঁদের আশা, ভবিষ্যতে ভাল কিছু হতেও পারে।
বাজেট নিয়ে তেমন উচ্ছ্বসিত নন বরাকর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উপদেষ্টা দীপক দুধানিও। তবে স্বনিযুক্তি প্রকল্পে মহিলাদের জন্য বিশেষ সাহায্যের যে প্রস্তাব বাজেটে রাখা হয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন দীপকবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এমএসএমই-র আওতায় মহিলা উদ্যোগপতিদের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি থেকে বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কর ছাড় ও সংরক্ষণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ তবে শিল্পাঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগপতিরা বিশেষ লাভবান হচ্ছেন না বলেই মত ওই বণিকসভার।
আয়করের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমারেখা বাড়ানোয় বেতনভুক কর্মচারীরা উপকৃত হবেন। ফলে বিনোদন ব্যবসা বাড়বে বলে মনে করছেন আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের উপদেষ্টা সুব্রত দত্ত। তাঁর পরামর্শ, ‘‘মধ্যবিত্তদের দিকে তাকিয়েই এই বাজেট। এই মুহূর্তে যাঁরা উদ্যোগ গড়ার কথা ভাবছেন, তাঁরা বিনোদন ব্যবসা বা ক্ষুদ্রশিল্প গড়ে তুলতে পারেন।’’ আয়কর সংক্রান্ত প্রস্তাবে পরোক্ষে ব্যবসার উন্নতি হবে, জানান আসানসোলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অধীর গুপ্তও।