রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পগুলিতে এ বার রেলের অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করছে বিশেষজ্ঞ মহল। দেখা যাচ্ছে, কাজের অগ্রগতি অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করেছে রেল মন্ত্রক। যে-সব মেট্রো প্রকল্প প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে, সেখানে বরাদ্দ আগের চেয়ে কমে গিয়েছে। কয়েকটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে আবার বরাদ্দ আগের চেয়ে বেশ কিছুটা বেড়েছে।
কলকাতা মেট্রোয় অগ্নিকাণ্ডের জেরে ভূগর্ভস্থ স্টেশনগুলিতে ধোঁয়া নিষ্কাশনের ব্যবস্থা তৈরির জন্য নতুন করে ৪৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। দমদম ও মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনের মধ্যে সুড়ঙ্গে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বাতানুকূল যন্ত্র চালু রাখার বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৬৬ লক্ষ টাকা।
বাজেটে রেল মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে বরাদ্দ করা হয়েছে ৯০৫ কোটি টাকা। বিগত বছরে ওই খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১১০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দ কমেছে প্রায় ১৯৫ কোটি টাকা। কেন এমনটা হল, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। তবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কর্তাদের দাবি, বরাদ্দের পরিমাণ কমলেও অতীতে তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে টাকার প্রশ্নটি কোনও ভাবেই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। প্রকল্পের কাজ অনেকটা এগিয়ে যাওয়ায় বরাদ্দ কিছু কমানো হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁদের অনেকে।
নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজও অনেকটা এগিয়েছে। বরাদ্দ কমে গিয়েছে সেখানেও। চলতি বছরে ওই মেট্রো প্রকল্পের বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় ১০ কোটি টাকা কমেছে। ওই প্রকল্পের খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা। নোয়াপাড়া-বরাহনগর এবং নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজ অনেকটাই সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় চলতি বছরে ওই প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে ৩৬ কোটি করা হয়েছে।
যে-সব প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে, তাদের মধ্য়ে আছে বরাহনগর-দক্ষিণেশ্বর-ব্যারাকপুর মেট্রো প্রকল্প। ২০১৮ সালের বাজেটের পিঙ্কবুকে ওই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের কোনও উল্লেখই ছিল না। পরে পরিমার্জন করে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। আর চলতি বছরে ওই প্রকল্পে ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নোয়াপাড়া-বারাসত মেট্রো প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে জমিজটে আটকে ছিল। গত বছরের শেষ দিকে রেল বোর্ড সেই প্রকল্পে বিমানবন্দরের জমিতে নিউ ব্যারাকপুর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ রেলপথ নির্মাণের সম্মতি দেওয়ায় চলতি বাজেটে ওই প্রকল্পে বরাদ্দ আগের তুলনায় বেড়েছে। গত বছরের ১৮৭.৫ কোটি থেকে ওই প্রকল্পের বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা।
জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো প্রকল্পের ক্ষেত্রে বরাদ্দে কোনও পরিবর্তন হয়নি। গত বছর ওই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ১০০ কোটি টাকা। এ বার সমপরিমাণ টাকাই দেওয়া হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো হলদিরাম পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রকল্পটি জীবিত রাখার স্বার্থে ওই প্রকল্পে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত বছর অবশ্য ওই প্রকল্পে কোনও টাকা বরাদ্দ করা হয়নি।