বাড়ি ফিরলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
দীর্ঘদিন ধরে সিওপিডি-তে ভুগছেন। কিন্তু এখনও পুরোপুরি সিগারেট ছাড়তে পারেননি। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি রওনা হওয়ার আগে তাঁকে সুস্থ থাকার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন চিকিৎসকেরা। চেষ্টা করবেন বলে কথা দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
টানা ছ’দিন হাসপাতালে থাকার পরে বাড়ি ফিরছেন, তাই সকাল থেকে বুদ্ধবাবুর মেজাজ ছিল ফুরফুরে। চিকিৎসক, নার্স, অন্য স্বাস্থ্যকর্মী-সহ সকলের সঙ্গেই ভাল ভাবে কথা বললেন। বাড়ি রওনা হওয়ার আগে বুদ্ধবাবু তাঁদের বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে আপনারা যে-ভাবে কাজ করছেন, তা প্রশংসনীয়। আপনারা সকলেই খুব সাবধানে কাজ করবেন।’’
প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতার ওই হাসপাতালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ৫১৮ নম্বর কেবিনে ভর্তি হন বুদ্ধবাবু। এক সময় তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হয়ে পড়েছিল। ধীরে ধীরে সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়। এ দিন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষকে বার বার ধন্যবাদ জানান। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ সোমবারেই বুদ্ধবাবুর গালভর্তি দাড়ি কাটানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। এ দিন সকালে বাড়ি থেকে তাঁর জন্য পাজামা-পাঞ্জাবি আনা হয়েছিল। তা পরেই স্ট্রেচারে শুয়ে বাইরে বেরোন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সেই বাড়ি ফেরেন তিনি। যে-হাসপাতালে তিনি ভর্তি ছিলেন, সেখানকার ডেপুটি মেডিক্যাল সুপার চিকিৎসক সপ্তর্ষি বসু, মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম সদস্য চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী এবং এক জন নার্স তাঁর সঙ্গে বাড়ি পর্যন্ত যান। ছিলেন মীরাদেবী এবং দীর্ঘদিনের ছায়াসঙ্গী তপনবাবুও। বাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন বুদ্ধবাবুর ব্যক্তিগত চিকিৎসক সোমনাথ মাইতি।
আরও পড়ুন: ১০ বছর খেয়ে এখন বিরোধী! তোপ মমতার
এ দিন সকালেই বুদ্ধবাবুর রাইলস টিউব খুলে নেওয়া হয়। জলখাবারে মুখ দিয়েই ওটস খান তিনি। অন্যান্য বারের থেকে এ বার যে তাঁর শারীরিক অবস্থা বেশি মাত্রায় খারাপ হয়েছিল, এ দিন তাঁকে সেটা বুঝিয়ে বলেন চিকিৎসকেরা। তখনই তাঁকে সুস্থ থাকার আবশ্যিক শর্ত হিসেবে সিগারেট ছাড়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হয়। জানানো হয়, বাড়িতে গেলেও ঠিকমতো বাইপ্যাপ নিতে হবে। এ দিন তাঁর জন্য বাড়িতে নতুন একটি বাইপ্যাপ কেনা হয়। বাড়িতে তালিকা মেনে খাওয়াদাওয়া করতে হবে বলেও জানান চিকিৎসকেরা।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য তথা ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সৌতিক পাণ্ডা ও হৃদ্রোগ চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল জানান, বুদ্ধবাবুর কিডনি ভাল আছে। তাই
আরও পড়ুন: টেস্ট বাড়তেই রাজ্যে লাফিয়ে বৃদ্ধি পেল করোনা আক্রান্ত, তবু স্বস্তি সুস্থতার হারে
ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে ডাল, মাছ, ডিমের মতো প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে বলা হয়েছে। যাতে ফুসফুসের পেশি ঠিক থাকে, সেই জন্য তাঁর বুকের ফিজিয়োথেরাপি চলবে বাড়িতেও। নিজে থেকে কেশে কফ বার করার সময় যাতে কোনও ব্যথা বা অন্য সমস্যা না-হয়, সেই জন্যই এটা দরকার বলে চিকিৎসকদের অভিমত। বাড়িতে বুদ্ধবাবুকে হাঁটাচলা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।