সিভি আনন্দ বোস এবং ব্রাত্য বসু। —ফাইল ছবি।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ নিয়ে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত তুঙ্গে। বোসের নির্দেশকে ‘এক্তিয়ার-বহির্ভূত’ বলে দাবি করে তার সমালোচনায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। সেই আবহে বোসকে আবার বিঁধলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য বোসের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে রাজ্যপালই বেতন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অধ্যাপকদের! রাজ্য বেতন দেবে আর রাজ্যপাল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন, তা হবে না বলেই জানিয়েছেন ব্রাত্য।
শুক্রবার রাজভবন থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাসে দুর্নীতি, হিংসা, এবং সেই ক্যাম্পাসকে নির্বাচনী প্রচার ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা নিয়ে রাজ্যপাল তথা আচার্য বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট অথবা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে সেই তদন্ত হবে। বোসের সেই নির্দেশ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। ব্রাত্যের বক্তব্য, রাজ্যপালের অপর সত্তা আচার্য বা চ্যান্সেলর। তাঁর নিয়োগ করা অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম গন্ডগোল হচ্ছে। যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এ ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়, তা হলে এই উপাচার্যদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়াই উচিত। শনিবার এবিপি আনন্দের সাক্ষাৎকারে ব্রাত্য বলেন, ‘‘আমরা তো বার বার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলতে বলছি। উনি একাই সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন! আমরা তো বলছি, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যদি এ রকম চলে, তা হলে তো আমরা যৌথ ভাবেই তদন্ত করতে পারি।’’
বোসকে শিক্ষামন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘শিক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আপনি বেতন জোগাড় করুন। মাইনে দেবে সরকার আর উনি (আনন্দ বোস) লোক বসাবেন, এটা হতে পারে না।’’ রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে লাগাতার সংঘাতের আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক নিয়েও মুখ খুলেছেন ব্রাত্য। বলেছেন, ‘‘ভাল সম্পর্কের কোনও বিষয় নেই। মুখ্যমন্ত্রী যখন দেখা করেছিলেন, উনি বলেছিলেন বিলে সই করে দেবেন। তার পর আর করেননি।’’
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত ওয়েবকুপার বৈঠক এবং সেখানে ব্রাত্য-সহ তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি নিয়েই সাম্প্রতিক সমস্যার সূত্রপাত। শুক্রবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ঘর সিল করে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বোস। শনিবার ব্রাত্য জানালেন, উপাচার্যের ঘর কেউই সিল করেনি। দরজা খোলাই রয়েছে।