কল সেন্টারের জন্য অফিস ভাড়া নিয়ে তার আড়ালে বসে অবৈধ ফোন এক্সচেঞ্জ চালিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিল ‘সিপ ট্রাঙ্ক’ কাণ্ডের ধৃত অভিযুক্তরা।
কল সেন্টারের জন্য অফিস ভাড়া নিয়ে তার আড়ালে বসে অবৈধ ফোন এক্সচেঞ্জ চালিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিল ‘সিপ ট্রাঙ্ক’ কাণ্ডের ধৃত অভিযুক্তরা।
আসানসোল এবং বড়জোড়ার আইটি পার্কে গত বছর লকডাউনের আগে ঘর ভাড়া নিয়েছিল ধৃত জিশাদ একে এবং মহম্মদ রিয়াজের পলাতক ‘বস’। কেরলের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির খোঁজে গত দুদিন ধরে বিভিন্ন জায়গাতে তল্লাশি হলেও তার নাগাল পায়নি রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ। অভিযোগ, ওই অফিসে কল সেন্টারের কাজকর্ম হবে বলে ভাড়া নেওয়া হলেও তা থেকে ‘সিপ ট্রাঙ্ক’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট কলকে স্থানীয় কলে পরিণত করে প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল ধৃতরা।
এসটিএফ সূত্রের খবর, কোন অফিসেই বেশি কর্মী নিয়োগ করা হত না। কম সংখ্যক বিশ্বস্ত কর্মী নিয়েই সেখানে কাজ চলত। ‘বস’-এর অনুপস্থিতিতে জিশাদ এবং রিয়াজ পুরো বিষয়টি দেখভাল করত। বুধবার রাতে আসানসোল ও বড়জোড়ায় তারা ধরা পড়ে। ধৃতদের জেরার পর গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দিনে কয়েকশো ফোন কল আসত বিদেশ থেকে। তবে সেই ফোন কাদের করা হত, সে-বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি বলে সূত্রের খবর।
ধৃতদের সঙ্গে জঙ্গি বা আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতী চক্রের যোগ সূত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তাঁদের কথায়, কারা ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করত, তার তালিকা এখনও মেলেনি। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, বর্তমানে উত্তর আসানসোল থানা এবং বড়জোড়া থানায় দু’টি পৃথক মামলা রুজু হয়েছে ওই কাণ্ড নিয়ে। স্থানীয় পুলিশ তদন্ত চালালেও ওই দু’টি মামলার তদন্তভার এসটিএফের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কয়েকটি জায়গায় কলসেন্টারের আড়ালে ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধ ফোন এক্সচেঞ্জ চালিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে একটি চক্র।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এর আগে গত বছর এ রাজ্যের বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার সেক্টর ফাইভে ‘সিপ ট্রাঙ্ক’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট কলকে স্থানীয় কলে পরিণত করার একটি চক্রের সন্ধান মিলেছিল। তখনও কল সেন্টারের আড়ালে ওই কাজ করা হত। সে সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন বেশ কয়েক জন। তাদের সঙ্গে আসানসোল এবং বড়জোড়া থেকে ধৃত কেরলের দুই বাসিন্দার কোনও যোগাযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। কয়েক মাসের ব্যবধানে দিল্লি এবং হায়দারাবাদে ওই একই কায়দায় প্রতারণার অভিযোগে কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল সেখানকার পুলিশ। তাদের সঙ্গে এই চক্রের যোগাযোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে এক পুলিশ অফিসার জানান।