BSF

BSF: বাহিনীর আশ্বাসে আশ্বস্ত নয় সীমান্ত

সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক্তিয়ার এক ধাক্কায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার কথা শুনে উদ্বিগ্ন মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।

Advertisement

বিমান হাজরা, সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২১ ০৭:১৪
Share:

ফাইল চিত্র।

সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক্তিয়ার এক ধাক্কায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ার কথা শুনে উদ্বিগ্ন মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ।

Advertisement

তবে বিএসএফের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই বুধবার বিএসএফের পূর্ব কমান্ডের এসডিজি-র পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, অনুপ্রবেশ, কাস্টমস-সহ কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র রয়েছে বিএসএফের জন্য। সেটা ১৫ কিলোমিটারকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে। কোনও রকমের পুলিশি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি বিএসএফকে। এফআইআর বা ঘটনার তদন্ত ভার রয়েছে পুলিশের উপরেই। তাই বিএসএফ কাউকে আটক করলে, তাকে পুলিশের হাতেই তুলে দিতে হবে।

কিন্তু তাতে পুরোপুরি আশ্বস্ত হননি সীমান্তের মানুষ। ফরাক্কা থেকে লালগোলা হয়ে জলঙ্গি। মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় ১২৫ কিলোমিটার সীমান্ত পথের দু’পাশে অসংখ্য ছোট বড় ঘনবসতির গ্রাম। এমনকি, পদ্মাপারের চরেও প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বাস। সেখানে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। তার একটি প্রধান অভিযোগ হল ভাষা সমস্যা। এই এলাকার মানুষের জীবনযাপনের ধারা, সংস্কৃতি, ভাষা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না বলেই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাতেই অনেক সময় মিথ্যা সন্দেহের শিকার হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। অথচ, তাঁদের নিত্য ওঠাবসা করতে হয় বিএসএফের সঙ্গেই। তাঁদের উদ্বেগ, এখন বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়লে, তাঁদের দুর্ভোগও বাড়বে। সীমান্ত লাগোয়া একটি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস তিওয়ারি বলছেন, “গঙ্গা ও পদ্মার পার বরাবর বিএসএফের নিজস্ব সড়ক গিয়েছে সীমান্তে তাদের যাতায়াতের জন্য। বহু বসতি আছে ওই সব এলাকায়। সন্ধ্যের পর ওই পথ দিয়ে গেলেই বিএসএফের জিজ্ঞাসাবাদে পড়তে হয়। সন্দেহ হলেই তার কপালে নেমে আসে অশেষ দুর্ভোগ।’’ মৎস্যজীবী বুধন হালদার বলছেন, “নদীতে মাছ ধরার উপযুক্ত সময় রাত। কিন্তু বিএসএফের বাধায় তা সম্ভব হয় না।’’ জলঙ্গির বিধায়ক তৃণমূলের আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলছেন, ‘‘একটা সময় বিএসএফ তাদের নির্দিষ্ট যে ১৫ কিলোমিটার সীমানা ছিল, তা পেরিয়ে মানুষের উপরে নির্যাতন চালাত। অনেক লড়াই আন্দোলনের ফলে সেই সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু নতুন করে এই ক্ষমতায়নে আমরা আতঙ্কিত।’’

Advertisement

তবে মুর্শিদাবাদের বিএসএফের এক অফিসারের মতে, বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগ আসে নির্দিষ্ট জায়গায় কোনও সন্দেহভাজন লুকিয়ে রয়েছে, বা আত্মগোপন করে রয়েছে কোনও অনুপ্রবেশকারী। কোথাও কোনও আগ্নেয়াস্ত্রের ডেরা গড়ে উঠেছে। এই সব ক্ষেত্রে বিএসএফ গিয়ে তল্লাশি করবে। আটক করে তাদের স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেবে।

তাই ঘটনা এখন কোন দিকে গড়ায়, সে দিকেই নজর সীমান্তের বাসিন্দাদের। সীমান্তের অনেকে অবশ্য স্বীকার করেন, বিএসএফ কড়া হাতে মোকাবিলা করায় এ বছর পাচার কমেছে। পাচারকারীদের উপদ্রবও কমেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement