প্রতীকী ছবি।
অনুশীলনেই দারুণ পারফরম্যান্স করলে হয় না। ম্যাচেও তা ধরে রাখতে হয়। আর তেমনই বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের সুবিধার্থে তৈরি হওয়া পিডব্লিউডি অ্যাপের আসল পরীক্ষা বিহার বিধানসভা নির্বাচনে। কারণ, অ্যাপ আদতে কতটা কাজে লাগল, তা বোঝা যাবে সেখানে। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই ইতিমধ্যে বিহারে নানাবিধ প্রচার শুরু করেছে
নির্বাচন কমিশন। আর এই অ্যাপের মাধ্যমে কেউ বিশেষ চাহিদসম্পন্ন হিসাবে নিজেকে জানালে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কাজে তাঁর বাড়ির দরজায় গিয়ে কড়া নাড়বেন বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)। প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপই করবেন তিনি।
বুথ বা সরকারি দফতরে পৌঁছনোর সমস্যায় ভোটার তালিকায় নাম তোলা থেকে বঞ্চিত হন অনেক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। তাই সে অসুবিধা থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ‘মুক্ত’ করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক উৎসবে আরও মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পিডব্লিউডি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি কমিশনের।
এই অ্যাপে কোনও মানুষ যদি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হিসাবে নিজেকে পরিচয় দেন, তাহলে তাঁর বাড়ি পৌঁছে ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সংশোধন, বুথ পরিবর্তন, পরিচয়পত্র (এপিক) ছবি-বদল সংক্রান্ত সব কাজটাই করে দেবেন বিএলও। একই সঙ্গে কোনও অভিযোগ থাকলে তা-ও অ্যাপে নথিভুক্ত করতে পারবেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা। তার সঙ্গে ভোটের কাজের সঙ্গে জড়িত বুথ থেকে রাজ্য বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্য পাবেন তাঁরা।
ভোটের দিন বুথে যাওয়া নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা। সেই সুযোগে তাঁদের বুথ পর্যন্ত পৌঁছে ভোটে 'প্রভাব' বিস্তারের চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলি। তেমনও অভিযোগ রয়েছে। তা থেকেও বেরিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের। কারণ, তাঁরা চাইলে হুইলচেয়ারের জন্য আবেদন করতে পারেন। অ্যাপে তার বন্দোবস্তও রেখেছে কমিশন। একই সঙ্গে বুথের অবস্থান জানতে অ্যাপে থাকা গুগল ম্যাপও দেখা যাবে। জানা যাবে, ইভিএমে যেভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীর নাম থাকে, সেভাবেই নিজের কেন্দ্রের প্রার্থীদের নাম দেখে নিতে পারবেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে কমিশনের তৈরি অ্যাপ ব্যবহার যাতে সমস্যায় না পড়েন বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা, তাই সেখানে শ্রবণমাত্রা বৃদ্ধি, বাড়তি আলো, বড় গ্রাফিক (টেক্সট ও আইকন), পড়ার সুবিধার্থে উন্নতমানের টাইপোগ্রাফির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এত কিছু কতটা ব্যবহারকারী কাজে এল, তার আসল পরীক্ষা বিহার বিধানসভা নির্বাচনেই।
সব অনুশীলন হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার খাতাই তো অনুশীলনের বড় মাপকাঠি!