Mamata Banerjee

মেদিনীপুর দেখেই তেতে বনগাঁ, মমতার সভায় ‘চাই’ ২ লাখ লোক

জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দু’লাখের ‘টার্গেট’ ঠিক করে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:১০
Share:

বাগদায় তৃণমূলের প্রস্তুতি সভা।—নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন সভা করতে। সেই সভার প্রস্তুতিতে যেন যুদ্ধকালীন তৎপরতা। সোমবারের মেদিনীপুর কার্যত উত্তর ২৪ পরগনার জেলা নেতৃত্বকে আরও উজ্জীবিত করেছে। দলনেত্রীর মেদিনীপুরের সভায় লোক সমাগম দেখে তাঁরা ঠিক করেছেন, আগামী ৯ ডিসেম্বর, বুধবার গোপালনগরে লাখ দুয়েক মানুষের জমায়েত করতে হবে। নতুন করে তাই আবার ‘ঘুঁটি’ সাজাচ্ছেন জেলা নেতৃত্ব।

Advertisement

বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সাতটি বিধানসভা— কল্যাণী, হরিণঘাটা, বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, গাইঘাটা এবং স্বরূপনগর। এর মধ্যে প্রথম দু’টি বিধানসভা নদিয়া জেলার মধ্যে পড়ে। বাকি পাঁচটি উত্তর ২৪ পরগনায়। জেলা নেতৃত্ব ওই দিনের জনসভার ‘ভিড়’ দেখিয়ে দলনেত্রীকে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, লোকসভা ভোটের নিরিখে ৪টি বিধানসভায় (স্বরূপনগরেই একমাত্র এগিয়ে ছিল তৃণমূল) পিছিয়ে থাকার পুনরাবৃত্তি একুশের ভোটে হবে না। পাঁচটি বিধানসভাই তৃণমূল জিতবে। আর সে কারণেই জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দু’লাখের ‘টার্গেট’ ঠিক করে দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

‘লক্ষ্যভেদ’ করতে তাই ময়দানে নেমে দৌড়চ্ছেন জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব। যেমন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের অন্যতম আহ্বায়ক শঙ্কর দত্ত। করোনা উপসর্গ থাকায় সম্প্রতি আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। কিন্তু আইসোলেশনের পরেও কোনও বিশ্রাম জোটেনি। গোটা লোকসভা এলাকা চষে বেড়াতে হচ্ছে। পরিকল্পনা ছকতে হচ্ছে। ভোটের দামামা যে ওই দিন থেকেই বাজিয়ে দিতে চাইছে দল, সেটা দুর্বল শরীরে তাঁর বাগদা থেকে স্বরূপনগর, গোবরডাঙা থেকে গাইঘাটা দৌড় দেখেই বোঝা যাচ্ছে। পথসভা আর বাইক মিছিলের ফাঁকে ব্যস্ত শঙ্কর শুধু বলছেন, ‘‘মানুষের জন্য, দলের জন্য সাময়িক অসুস্থতা কাটিয়ে পথে নেমেছি। দিদি আসছে এটাই বড় কথা।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দু’পয়সার প্রেস! ‘সঠিক’ বক্তব্যের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী সাংসদ মহুয়া মৈত্র

শঙ্করের মতো কিছু দিন আগেই অসুস্থতা থেকে মুক্তি মিলেছে বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠের। তাঁর উপরেও এই সভার অনেকটা দায়িত্ব। অসুস্থতার ধকল কাটিয়ে এত চাপ নেওয়া প্রসঙ্গে গোপালের মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্রষ্টা আর বাকি সবাই সৃষ্টি। স্রষ্টার কোনও বিনাশ হয় না। দিদির ডাকে আগামী বিধানসভা ভোটে বনগাঁ লোকসভার চারটে আসন আমরা জিতবই। তার প্রস্তুতিতে চাপ তো নিতেই হবে।’’

আরও পড়ুন: ব্ল্যাকমেল, দর কষাকষিতে লাভ নেই, নাম না করে শুভেন্দু-বার্তা নেত্রীর

দৌড়ে বেড়াচ্ছেন জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক নারায়ণ গোস্বামী। তিনিও আশাবাদী মমতার সভায় দু’লক্ষের উপরে লোক হবে। তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয় বিজেপি সাংসদ ইদানীং নিজের দলের বিরুদ্ধেই নানা কথা বলছেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজনও আর ওঁদের সঙ্গে নেই। ওঁরা আমাদের সভাতেই আসবেন। আসলে দিদিকে নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ। তাই দু’লাখ লোক হওয়াটা কোনও বিষয় নয়।’’ ভিড় নিয়ে আশাবাদী গোবিন্দ দাস বা রাজীব দত্তের মতো নেতারাও। তাঁরাও দিন-রাত এক করে দিচ্ছেন গোপালনগরের সভা নিয়ে।

আরও পড়ুন: নীলবাড়ির লক্ষ্যে বিশ্ব-বাঙালিকেও দলে টানতে নয়া কৌশল বিজেপির

জেলা সভাপতি যদিও ‘ভিড়-কৌশল’ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। শোনা যাচ্ছে সাংসদ-ঘনিষ্ঠ কাউকে কাউকে ওই দিনের সভায় হাজির করানো হবে। এ নিয়ে জ্যোতিপ্রিয়র মন্তব্য, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলতে চাই না। যা হবে, ৯ তারিখে গোপানগরের মঞ্চে দেখতে পাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement