বিধানসভায় আসার পথে আক্রান্ত হন বিশ্বজিৎ দাস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ফের বিজেপি নেতার উপর হামলার অভিযোগ। এ বার আক্রান্ত হলেন বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। শুক্রবার সকালে বিধানসভায় আসার পথে এক দল দুষ্কৃতী তাঁর গাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় গুরুতর চোট পেয়েছেন বিধায়ক। বিশ্বজিতের উপর হামলার এই ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বনগাঁয়। ঘটনার পরেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।
বনগাঁর গোপালনগর এলাকায় বিশ্বজিৎ দাসের বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বিধানসভার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। অভিযোগ, বাড়ি থেকে কিছু দূর এগনোর পরেই তাঁর ঘিরে ধরে এক দল দুষ্কৃতী। লাঠি, বাঁশ, ইট ও পাথর নিয়ে তাঁর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলার সময় বিশ্বজিতের সঙ্গে তাঁর কয়েক জন সহযোগী গাড়িতে ছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন,
বাঁশ দিয়ে মারা হয় বিধায়ককেও। তাতে বুকে আঘাত পান বিশ্বজিৎ। পরে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন: খাগড়াগড়-কাণ্ডে আজ ১৯ জনের সাজা ঘোষণা
আরও পড়ুন: সুজিতের এলাকায় দিলীপের 'চায়ে পে চৰ্চা', উত্তপ্ত লেকটাউন, দফায় দফায় সংঘর্ষ তৃণমূল-বিজেপির
২০১১ এবং ২০১৬, পর পর দু’বার বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন বিশ্বজিৎ দাস। তৃণমূলের টিকিটেই জিতেছিলেন তিনি। তবে এ বছর লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপিতে যোগ দেন বিশ্বজিৎ। তার পর থেকেই বার বার তাঁর উপর হামলা হচ্ছে বলে দাবি বিধায়কের অনুগামীদের। জখম বিধায়ককে কলকাতায় নিয়ে আসার পথে তাঁর এক সঙ্গী আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘এ দিন সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা বিধায়কের গাড়ি ঘিরে ফেলেছিল। তার পর বেপরোয়া ভাবে হামলা চালানো হয়।’’
এ দিনের ঘটনা নিয়ে গোপালনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কে বা কারা হামলা চালিয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত জানা না গেলেও, তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলছেন বিশ্বজিৎ ঘনিষ্ঠরা।
তৃণমূল এবং বিজেপির টানাপড়েনে এমনিতেই গত কয়েক মাস ধরে উত্তপ্ত বনগাঁ। পুরসভার দখল নিয়ে এখনও অশান্তি অব্যাহত সেখানে। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলররা প্রথমে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনা হয়েছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তা নিয়ে অনাস্থার উপর ভোটাভুটির দিনে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থাকা কাউন্সিলরদের পুরসভায় ঢুকতেই দেওয়া হয়নি।
সেই সময় বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পরে নতুন করে অনাস্থা এনে ভোটাভুটির নির্দেশ দেয় আদালত। তবে বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর বিজেপি থেকে দলে ফিরে আসায় তারাই এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে দাবি তৃণমূলের।
এ দিন সকালেই লেক টাউনে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘চায়ে পে চর্চা’য় হামলা হয়েছে। তা নিয়ে দফায় দফায় সঙ্ঘর্ষ হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বনগাঁর বিধায়কের উপর এই হামলা। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব। আক্রান্ত বিধায়কের শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি।