লালনের স্ত্রী রেশমার বক্তব্যে বিস্মিত কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
বগটুইকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু মামলায় সিআইডি তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। পাশাপাশি বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বিস্ময় প্রকাশ করলেন মৃত লালনের স্ত্রীর এই বক্তব্যেও।
শুক্রবার শুনানি পর্বে বিচারপতি সেনগুপ্ত সিআইডি তদন্তের বিষয়ে সরাসরি লালনের স্ত্রী রেশমাকে একাধিক প্রশ্ন করেন। রেশমার বক্তব্যে অসঙ্গতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিচারপতি সেনগুপ্তের সঙ্গে রেশমার প্রশ্নোত্তর পর্ব হয় এ ভাবে—
বিচারপতি: সিবিআই অফিসারদের ফোন নম্বর আপনাকে কে দিল?
রেশমা: ফোন নম্বর সিবিআই অফিসাররাই দিয়েছিলেন।
বিচারপতি: এফআইআর কে লিখে দিলেন?
রেশমা: জানা নেই।
বিচারপতি: আপনি জানেন না কে লিখল? অচেনা লোককে দিয়ে লেখালেন?
রেশমা: কান্নাকাটি করছিলাম। ভেঙে পড়েছিলাম। হাত কাঁপছিল। কেউ সাহায্য করে দেয়।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, লালনের স্ত্রী গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। অথচ তাঁর বয়ানই রেকর্ড করা হয়নি। তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বলছেন। অথচ প্রতি দিন আদালতে আসছেন! রেশমা সিবিআই আধিকারিকদের ফোন নম্বর কোথা থেকে পেয়েছেন তার তদন্ত করা উচিত বলেও জানান বিচারপতি। শুনানির পরে বিচারপতি সেনগুপ্ত সিআইডির ডিআইজিকে ঘটনাটির তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের নির্দেশে লালনের মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। পাশাপাশি, সিবিআইয়ের ৭ আধিকারিকের বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি-সহ নানা অভিযোগে অভিযোগ দায়ের করেছেন লালনের স্ত্রী রেশমা। তাঁর দায়ের করা এফআইআরে নাম রয়েছে সিবিআইয়ের ডিআইজি এবং এএসপি-সহ মোট ৭ জনের। সেই তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম সুশান্ত ভট্টাচার্য। ওই সিবিআই আধিকারিক গরু পাচার মামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন। গরু পাচারকাণ্ডে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে তিনি গ্রেফতার করেছিলেন। সুশান্ত ছাড়াও রয়েছে স্বরূপ দে-র নাম। তিনিও গরু পাচার মামলার তদন্তকারী অফিসার। বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে গিয়েছে সিবিআই।