প্রতীকী ছবি।
রবিবার সকালে যেখানে মিলেছিল কিশোরী মেয়েটির দেহ মিলেছিল, সোমবার সকালে তার কাছে নয়ানজুলিতে মিলল এক কিশোরের দেহ। দাবি, দেহটি অভিযুক্ত ছেলেটির। তার ফলে নতুন করে উত্তাপ ছড়াল চোপড়া অঞ্চলে।
এর মধ্যেই মেয়েটির দেহ মর্গ থেকে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময়ে পরিবারের সঙ্গী হয়েছিলেন বিজেপির তিন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, নিশীথ প্রামাণিক ও জয়ন্ত রায় এবং দলের রাজ্যের সহসভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ তাদের মাঝপথে আটকে দিলে অবরোধে বসে যান তাঁরা। পরে অবশ্য পুলিশি আশ্বাসে সেই অবরোধ ওঠে। দু’জনের বাড়িতেই যান তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী এবং সাংসদ। মেয়েটির বাড়ির লোকজন তাঁদের সামনে দাবি করেন, তাঁরা কোনও দল করেন না। জোর করে একটি দলের সঙ্গে তাঁদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে। ছেলের বাড়ির লোকজন আবার দাবি করেন, তাঁদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে।
প্রথমে হেমতাবাদে বিধায়কের রহস্যমৃত্যু। তার পরে চোপড়ায় কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু। উত্তর দিনাজপুরের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা এবং আরও কয়েক জন বিজেপি কার্যকর্তা। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহ উত্তরবঙ্গের সব ক’জন দলীয় সাংসদকে জরুরি তলব করেছেন।
কলকাতা থেকে এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আগেই লেখা হয়ে থাকে। পরে ডাক্তারদের দিয়ে সই করানো হয়। এখানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিষক্রিয়া এল কোথা থেকে?’’ কিশোরের দেহ মেলার ঘটনাকে তিনি ‘নজর ঘোরানোর চাল’ বলে মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ আইন হাতে নেবে না। কিন্তু সরকারকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তখন মানুষ আর রাস্তায় নামবে না।’’ গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্তও দাবি করেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: বেহাল রাজ্য, শাহকে নালিশ রাজ্যপালের
দিলীপবাবুর কথার জবাবে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে বসে তদন্ত করতে না করেছি। উনি জাদুকরের মতো যা জেনে যাচ্ছেন, তাতে তো সবাই ঘাবড়ে যাচ্ছেন।’’ তৃণমূল সূত্রে দাবি, ঘটনার পিছনে কোনও রাজনীতি নেই বলে মৃত মেয়েটির জেঠু এবং এক দাদু তৃণমূলের প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন। তাঁরা তো বটেই, মেয়েটির মা-ও সংবাদমাধ্যমের একটি অংশের সামনে দাবি করেছেন, ‘‘আমরা কোনও দল করি না। বরং এলাকার সবাইকে নিয়ে চলি। কোনও গোলমালও আমরা করিনি।’’ মন্ত্রী পরে বলেন, ‘‘দুটো ছেলেমেয়ে মারা গেল, দুঃখজনক ঘটনা। পুলিশ তদন্ত করুক। এখানে রাজনীতি ঢুকিয়ে লাভ নেই।’’
তৃণমূলের প্রতিনিধিদলটি মৃত কিশোরের বাড়িতেও গিয়েছিল। পরে দলের সদস্য তথা সাংসদ মৌসম নুর জানান, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই দুই বাড়িতে গিয়েছিলেন। মৃত কিশোরের বাড়ির লোকজনের দাবি, তাঁদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ষক বলে বদনামও করা হচ্ছে। তাঁদের সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন গৌতম দেব, মৌসম নুরেরা। পরে মৌসম বলেন, ‘‘পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করছে।’’