WBBSE

Blind Students: দৃষ্টিহীনদের নিজের স্কুলে পরীক্ষার দাবি

বেশির ভাগ পরীক্ষা কেন্দ্র দৃষ্টিহীনদের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। অধ্যক্ষদের বক্তব্য, এ বছর অন্তত দৃষ্টিহীনদের জন্য হোম সেন্টারে মাধ্যমিক পরীক্ষা হলে অনেকটাই সুবিধা হত।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ০৬:৫০
Share:

ফাইল চিত্র।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হোম সেন্টার বা পড়ুয়াদের নিজের নিজের স্কুলে হতে পারলে মাধ্যমিক কেন হবে না, সেই প্রশ্ন অমীমাংসিত থেকে গিয়েছে। অনেক স্কুলে পরিকাঠামোর অভাব দেখিয়ে নিজ স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু করোনার শেষ পর্বে অন্তত দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের হোম সেন্টারে মাধ্যমিকে বসতে দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন দৃষ্টিহীন স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা। দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের কার কোন স্কুলে সিট পড়েছে, তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ পরীক্ষা কেন্দ্র দৃষ্টিহীনদের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। অধ্যক্ষদের বক্তব্য, এ বছর অন্তত দৃষ্টিহীনদের জন্য হোম সেন্টারে মাধ্যমিক পরীক্ষা হলে অনেকটাই সুবিধা হত।

Advertisement

বেহালার একটি দৃষ্টিহীন স্কুলের অধ্যক্ষা লিজা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলের দৃষ্টিহীন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের আসন পড়েছে নিজের স্কুল থেকে বেশ কিছুটা দূরে। পড়ুয়ারা সকলে হস্টেলেই থাকে। বাইরে বেরিয়ে যানবাহনে চেপে দূরের স্কুলে পরীক্ষা দিতে যেতে হবে। করোনা এখনও পুরোপুরি যায়নি। সাধারণের থেকে দৃষ্টিহীনদের রাস্তাঘাটে চলাচল করা অনেক বেশি অসুবিধাজনক। অধ্যক্ষা বলেন, “আমাদের স্কুলের দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের জন্য যদি কোনও ভাবে হোম সেন্টারের ব্যবস্থা করা যায়, সেই আবেদন করেছি।’’

দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীদের হয়ে লিখে দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হবে রাইটারদেরও। এমনিতেই প্রতি বছর রাইটার পেতে সমস্যা হয়। দূরবর্তী পরীক্ষা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে রাইটার পেতে আরও সমস্যা হচ্ছে বলে জানান লিজাদেবী। দৃষ্টিহীন স্কুলগুলির অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, সামনের সোমবার পরীক্ষা শুরু। এখনও সব দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীর জন্য রাইটার পাওয়া যায়নি।

Advertisement

ধর্মতলার একটি দৃষ্টিহীন স্কুলের অধ্যক্ষ অমিয়কুমার শতপথী জানান, তাঁদের পড়ুয়াদের মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র স্কুল থেকে খুব বেশি দূরে পড়েনি ঠিকই। তবু মাধ্যমিকটা হোম সেন্টারে হলেই ভাল হত। গত দু’বছর করোনার দাপটে খুব সমস্যার মধ্যেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীরা। তখন হস্টেল থেকে সলে বাড়ি চলে গিয়েছিল। দৃষ্টিহীনদের পক্ষে অনলাইনে পড়াশোনা চালানো অনেক কঠিন। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে পড়তে হয়। অমিয়বাবু বলেন, “এমনিতেই দৃষ্টিহীন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার মধ্যে পড়াশোনা করতে হয়েছে। ফলে তাদের প্রস্তুতি অন্যান্য বারের মতো হয়নি। এই অবস্থায় স্কুলের চেনা পরিবেশে পরীক্ষা দিলে তাদের কিছুটা সুবিধা হত। সুবিধা হত রাইটার পাওয়ার ক্ষেত্রেও। হোম সেন্টার করার জন্য আবেদন জানানো সত্ত্বেও এখনও কোনও উত্তর মেলেনি।’’ ওই অধ্যক্ষ জানান, এ বার রাইটার পেতে অনেক বেশি অসুবিধা হচ্ছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে রাইটারদের বোঝাপড়ার জন্য একটা প্রশিক্ষণ হয়। শেষ মুহূর্তে রাইটার পেলে সেই বোঝাপড়া কতটা হবে, সেই বিষয়েও প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।

নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, তাঁদের স্কুলের পরীক্ষার্থীদের সেন্টার স্কুল-চত্বরের মধ্যেই অন্য একটি স্কুলে পড়েছে। তা সত্ত্বেও পরীক্ষার্থীদের হোম সেন্টার হলে ভাল হত। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “আমরা চাই, রাজ্যের সব দৃষ্টিহীন স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা এ বার হোম সেন্টারে পরীক্ষা দিক। সে-ক্ষেত্রে রাইটার পাওয়া থেকে পরীক্ষা দেওয়া, সব দিক থেকে ওরা অনেকটাই স্বস্তিতে পরীক্ষা দিতে পারবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement