অভিযোগ করা সত্ত্বেও সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছিল না তারা। তাই এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই যুবতী। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে এই ঘটনার তদন্তের উপর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এই তদন্তের রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ফাইল চিত্র।
নেটমাধ্যমে খোলামেলা ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ এবং সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা এক যুবতী। কিন্তু অভিযোগ করা সত্ত্বেও সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছিল না তারা। তাই এ বার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই যুবতী। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে এই ঘটনার তদন্তের উপর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এই তদন্তের রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মামলাকারীর আইনজীবী শুভব্রত চৌধুরী বলেন, ‘‘মেয়েটি বর্তমানে হাওড়ার বাসিন্দা হলেও আগে তিনি পার্ক স্ট্রিটে থাকতেন। সেই সময় তিনি নাবালিকা ছিলেন। ২০২০ সালে তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে একটি ছেলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীকালে মেয়েটির সঙ্গে ছেলেটির যোগাযোগ বাড়ে। সেই সময় মেয়েটির বেশ কিছু ছবি তোলা হয়। যে ছবিগুলিকে ফটোশপের মাধ্যমে আপত্তিকর ছবিতে পরিণত করা হয়। এই ছবিগুলিকে পরবর্তীকালে নেটমাধ্যমে তুলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেলিং করতে থাকে ছেলেটি।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন, গত বছর অভিযুক্ত ছেলেটি তার বন্ধুদের নিয়ে এসে মেয়েটিকে জোর করে কলেজ থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। সেই ছবিও পর্ন সাইটে তুলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মেয়েটিকে এবং তার পরিবারের লোকেদের ফোন করতে থাকে ছেলেটি ও তার বন্ধুরা। কিছুদিন পর ওই মেয়েটির একটি বান্ধবী ফোন করে জানায় তার অপাত্তিকর ছবি নেটমাধ্যমে তুলে দেওয়া হয়েছে। আইনজীবী জানিয়েছেন, মেয়েটি বার দুয়েক আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল।
এর পরই মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে হাওড়া সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, থানার পক্ষ থেকে সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরবর্তীকালে মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু তারপরেও সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
এর পর কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় মেয়েটির পরিবার। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে আদালত ঘটনার তদন্তের উপর নজরদারি করার জন্য হাওড়ার পুলিশ কমিশনার সি সুধাকরকে নির্দেশ দিয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে তদন্ত রিপোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। একই সঙ্গে পুলিশের তদন্তে গাফিলতির নিয়ে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন তিনি তাও জানাতে হবে।
হাওড়া সাইবার ক্রাইম থানার ওসিকেও বলা হয়েছে, তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন আদালতে উপস্থিত হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে তা জানাতে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২২ মার্চ।