বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ফাইল চিত্র।
রাজভবনে রাজ্যের নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ রাজভবনে পৌঁছয় সুকান্তর গাড়ি। রাজভবন থেকে বেরিয়ে বালুরঘাটের সাংসদ জানান, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের তরফে তেষট্টি পাতার একটি রিপোর্ট রাজ্যপালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে রাজ্যের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তারে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি কর্মসংস্থান নিয়ে ফের খোঁচা দেন শাসকদল তৃণমূলকে। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষিত যুবকরা চাকরি না পেয়ে ভিন্রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। রাজ্যে বোমা-বারুদের শিল্প চলছে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। রাজ্যে একের পর এক জায়গায় বোমা উদ্ধারের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি দাবি করেন, বোমা-বন্দুকের মাধ্যমে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয় পেতে চাইছে তৃণমূল। এ সব কিছুই রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে বলে সুকান্তর দাবি।
রাজ্যের পূর্ববর্তী রাজ্যপাল, তথা দেশের বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছিল রাজ্য প্রশাসনের। ত়ৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, রাজ্যপাল বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের মতো আচরণ করছেন। তাঁকে কটাক্ষ করে ‘পদ্মপাল’ বলেও সম্বোধন করেছিলেন শাসক দলের কেউ কেউ। সেই প্রসঙ্গ তুলে সুকান্তর বক্তব্য, রাজ্যপাল পদকে ‘কালিমালিপ্ত’ করেছে তৃণমূল। কবে শাসক দলের কোন নেতা কী ভাবে সাংবিধানিক প্রধানকে আক্রমণ করেছিলেন তার যাবতীয় তথ্য আনন্দকে দিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবার সকালেই রাজ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাজ্যপাল। বলেন, “বাংলা দেশকে নেতৃত্ব দেবে।” এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের তরফে সুকান্তকে প্রশ্ন করা হলে সুকান্ত বাংলার শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি মেনে নেন। তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, “বিবকানন্দ, রামকৃষ্ণ, নজরুলের বাংলা বরাবরই দেশকে পথ দেখিয়েছে, কিন্তু জগ ছোড়ার বাংলা দেশকে পথ দেখাতে পারবে না।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বিজেপির নেতৃত্বে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলার গৌরব বৃদ্ধি পাবে। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের একদা ‘তাজা নেতা’, ভাঙড়ের আরাবুল ইসলাম এক শিক্ষিকার দিকে জগ ছুড়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন সুকান্ত।
রাজ্যপাল আনন্দের শপথে আমন্ত্রণ পেলেও জাননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত। অভিযোগ করা হয় যে, আসন বণ্টনে তাঁদের অসম্মান করা হয়েছে। তৃণমূল সাংসদদের ডাকা হলেও বিজেপির কোনও সাংসদ কেন আমন্ত্রণ পাননি, সে প্রশ্নও তুলেছিলেন সুকান্ত। শপথগ্রহণের দিন বিকেলেই আনন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শুভেন্দু। সেই সময়ে আনন্দের হাতে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে আসেন বিরোধী দলনেতা। এ বার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে তেষট্টি পাতার রিপোর্ট দিয়ে এলেন সুকান্তও।