—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে শিয়ালদহ স্টেশনের নতুন নামকরণ করার জন্য বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের প্রস্তাব ঘিরে তৈরি হল বিতর্ক। এর আগে কেন্দ্র মোগলসরাই, ইলাহাবাদের মতো স্টেশনের নাম বদলানোর সময়ে ‘ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা’ বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী শিবির। এখন বিতর্কের তালিকায় যোগ হল শিয়ালদহের নামও।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের উপস্থিতিতে কলকাতায় রেলের একটি অনুষ্ঠানে শমীক প্রস্তাব দিয়েছেন, “শিয়ালদহ স্টেশন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করা হোক।” প্রস্তাবের ব্যাখ্যায় শমীক দাবি করেন, শিয়ালদহ স্টেশন এক সময় দেখেছিল উদ্বাস্তু মানুষের স্রোত। তাঁদের জন্য লড়াই করে পশ্চিমবঙ্গ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ। বিজেপি সাংসদের দাবি, “শ্যামাপ্রসাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন ইতিহাসবিদ রমেশচন্দ্র মজুমদার, বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা-সহ বিশিষ্টেরা। বিধানসভায় শ্যামাপ্রসাদের প্রস্তাব সমর্থন করেছিলেন জ্যোতি বসু, রতনলাল ব্রাহ্মণেরা।”
শমীকের এই প্রস্তাবের পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “নাম বদল করায় মন না দিয়ে যাত্রী সুরক্ষা আর পরিষেবা নিয়ে প্রস্তাব দেওয়া হোক। স্বামী বিবেকানন্দের নামে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম রাখা উচিত। কারণ, শিকাগো ধর্ম মহাসভা থেকে শহরে ফেরার সময় এখানেই নেমেছিলেন তিনি।” শমীকের প্রস্তাবের সরাসরি তীব্র বিরোধিতা করেছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “শ্যামাপ্রসাদকে নিয়ে সুভাষচন্দ্র বসুর কথাটা মনে আছে তো? কলকাতা বন্দরে ‘নেতাজি সুভাষে’র মাথার উপরে শ্যামাপ্রসাদকে বসানো হয়েছে। বাড়াবাড়ি হলে বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবেন না। শিয়ালদহে শ্যামাপ্রসাদের নামে ফলক বসলে, দরকারে আমরা তা ভেঙে দিয়ে আসব!”
রেলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে রাজ্য যে বঞ্চনার অভিযোগ করে, সেই প্রেক্ষিতে সরব হয়েছেন রেলমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “ইউপিএ আমলের তুলনায় গত ১০ বছরে বিজেপি সরকার রাজ্যের রেল প্রকল্পে অনেক বেশি বরাদ্দ করেছে। কেন্দ্র ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতেও প্রস্তুত।” যদিও কুণালের বক্তব্য, “মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন রেলমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের জন্য যতগুলি প্রকল্প এনেছিলেন, আগে সেগুলি শেষ করুন। সেই সময়ের (ইউপিএ আমলের) টাকার মূল্য এখনও কি একই আছে?”