ফাঁকা-ফাঁকা: গোপীবল্লভপুরে বিজেপির সভা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুকেই এ বার বিজেপির ‘পরিবর্তন যাত্রা’য় মাঠ রইল ফাঁকা।
দু’দিন আগেই ঝাড়গ্রাম জেলায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার জোড়া কর্মসূচি কার্যত ধাক্কা খেয়েছে। লালগড়ের সভায় নড্ডার বক্তব্যের মাঝেই লোকজন যেতে শুরু করেছিল। আর ঝাড়গ্রামের সভা তো লোক হয়নি বলে করাই যায়নি। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার গোপীবল্লভপুরে, দিলীপের বাড়ির এলাকাতেই ‘পরিবর্তন যাত্রা’র কর্মসূচিতে ভিড় জমল না।
এ দিন গোপীবল্লভপুরে হাজির ছিলেন দলবদলু নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ১১টা নাগাদ ‘পরিবর্তন যাত্রা’ শুরু হয় হাতিবাড়ির একটি অতিথিশালা থেকে। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন রাজীব। ৬০ মিটার দূরে হাতিবাড়ি মোড়ে এসে ‘পরিবর্তন যাত্রা’র রথ নয়াগ্রাম রওনা দেয়। তখন কলেজ সংলগ্ন মাঠে শ’খানেক লোক ছিলেন। রাজীব তাই অতিথিশালায় চলে যান। প্রায় এক ঘণ্টা পরে সাড়ে বারোটা নাগাদ রাজীব যখন মঞ্চে আসেন, তখন লোক কিছুটা বাড়লেও মাঠ ছিল প্রায় ফাঁকা। পুলিশের হিসেবে আটশো লোক হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতেও এ দিন ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনায় ভিড় বিশেষ হয়নি। এখানেও প্রধান বক্তা ছিলেন রাজীব। মঞ্চ থেকে দশ হাজার জমায়েতের কথা বললেও আদতে হাজার দুয়েক মানুষ ছিলেন।
গোপীবল্লভপুরে রাজীবের অভিযোগ, ‘‘ধমকে, চমকে মানুষকে আটকে রেখে দিয়ে সভায় আসতে দিচ্ছে না। তবে হৃদয় থেকে বিজেপিকে বার করতে পারবেন না।’’ যদিও ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি সুখময় শতপথীর দাবি, ‘‘গোপীবল্লভপুরে কোনও জনসভা ছিল না। পরিবর্তন যাত্রার ‘বাহন’ নিয়ে যাওয়ার সময় পথসভা হয়েছে। সেখানে যথেষ্ট লোকও ছিল।’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সভা যদি না হত তা হলে বড় আকারে মঞ্চ বেঁধে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল কেন? আসলে মানুষ ওদের বয়কট করেছে। তাই সভায় লোক হচ্ছে না।’’
এ দিন গোপীবল্লভপুরে ফের ছত্রধরকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে আক্রমণ করেন রাজীব। আর কেশিয়াড়িতে পুরনো দলনেত্রীর প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ভোটের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘কল্পতরু’ নন, ভোটতরু হয়ে গেছেন। বলছেন, আমাকে একবার ভোট দাও, আমি থাকব। কারা বলে আমি থাকব? যারা বুঝতে পারছে থাকবে না।’’ পুলিশ কর্তা হুমায়ুন কবীরের পদ ছেড়ে তৃণমূলের পতাকা ধরা নিয়েও কটাক্ষ করেন রাজীব।