‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচির ডাক বিজেপির। প্রতীকী ছবি।
এ বার তৃণমূলের ‘মডেল’ নিচ্ছে বিজেপি। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যে ‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচি নিয়েছে। এ বার বিরোধী বিজেপি শিবিরেরও লক্ষ্য ‘গ্রামে চলো’। জানুয়ারি মাস জুড়ে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ ১৮০ জন নেতাকে গ্রামে যেতে হবে বলে ঠিক করল বিজেপির কোর কমিটি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিচু তলার সংগঠনকে ‘চাঙ্গা’ করতে পঞ্চায়েত সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে সেই সময়সীমা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু বিজেপি সূত্রের খবর, জোর কদমে কাজ চললেও সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই সেই সময় আবার ২০ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
রাজারহাটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে, সহ-পর্যবেক্ষক আশা লকরা, অমিত মালবীয়দের উপস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, পঞ্চায়েতের আগে বুথস্তর থেকে রাজ্যস্তর পর্যন্ত কর্মী সম্মেলন করা হবে। সেই কাজে গতি আনতেই ১৮০ জন নেতা গ্রামে গ্রামে যাবেন।
এরই পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদকের (সংগঠন) তরফে হাল-হকিকত জানতে দলের জেলা সভাপতিদের একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মণ্ডল থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত পদাধিকারীদের নাম, ফোন নম্বর, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে কি না, শাখা সংগঠনের কমিটি তৈরি হয়েছে কি না, সেই সব তথ্য চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই তথ্যের উপরে নির্ভর করেই জেলার সাংগঠনিক সক্ষমতা বিচার করা হবে। যদি কোনও তথ্য না আসে, তবে ধরে নিতে হবে সেই জেলা দুর্বল।
দলের একাংশের ব্যাখ্যা, অনেক ক্ষেত্রেই লিখিত তথ্য না থাকায় জেলাগুলি থেকে ‘অতিরঞ্জিত’ রিপোর্ট আসে। তা ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ। আবার অপর অংশের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবার এই তথ্য রাজ্য নেতাদের কাছে চেয়েছেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সব তথ্য হাতে না থাকায় রাজ্য নেতারা শীর্ষ নেতৃত্বের প্রশ্নের মুখে বিব্রত হন। তাই এ বার সেই তথ্য জোগাড় করতে কোমর বাঁধছে রাজ্য বিজেপি। সেই সঙ্গে তারা ফের ফিরছে ‘মিস্ড কল’ দিয়ে সদস্য সংগ্রহে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটি সম্পূর্ণ দলীয় সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এই নিয়ে আমি সংবাদমাধ্যমে কিছু বলব না।’’
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্নীতিকেই সামনে রাখতে চাইছে বিজেপি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে চায় তারা।
কোর কমিটির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘এই ধরনের বৈঠকে দিল্লির নেতারা কিছু পরামর্শ দেন, রাজ্যের নেতারা কিছু প্রস্তাব দেন। সব মিলিয়ে একটা পথ নির্দেশিকা তৈরি হয়। পঞ্চায়েত সম্মেলন শেষ করাই প্রধান লক্ষ্য। নেতাদের গ্রামে যেতে বলা হয়েছে।’’