ফাইল ছবি
দলীয় কর্মীদের সামনে তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তৃতা করছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা। বক্তব্য শেষে আচমকা দর্শক আসন থেকে সমর্থকদের একাংশ প্রশ্ন করেন, সিবিআই এখনও কেন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করছে না? কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে নড্ডা বলেন, ‘দেরি হবে।’ ওই বিজেপি কর্মীরা বলেন, আপনি অমিত শাহকে বলুন। উত্তরে নড্ডা ফের একই কথা বলেন। নড্ডার এই মন্তব্যেই আলোড়ন শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূল প্রশ্ন তোলে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি এই নিয়ে কী করে মন্তব্য করেন? সিবিআই কি তবে বিজেপির হাতের পুতুল? বিজেপি অবশ্য এই নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার কলামন্দিরে। নড্ডার বঙ্গ সফরের দ্বিতীয়দিন শেষ পর্বে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নাগরিক সম্মেলনে বিশিষ্টজনদের মুখোমুখি হন। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে। তৃণমূল একাধিকবার দাবি করে এসেছে, বিজেপি সিবিআইকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ব্যবহার করে। এবার ভরা সভায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে দলীয় কর্মীদের এই প্রশ্নের ফলে, তৃণমূলের সেই অভিযোগই অক্সিজেন পেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি অবশ্য এই বিতর্ক থেকে দূরত্ব রাখতে চাইছে। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “সিবিআইয়ের কথা আপনাদের মুখে শোভা পায় না। আপনার পাশেই ঘুরছেন সিবিআইয়ের এফআইআর-এ নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী। সিবিআই তো তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে যায়, শুভেন্দুকে ধরে না কেন? সিবিআইয়ের রাজনৈতিক ব্যবহার করছেন।” তাঁর দাবি, “বিজেপির বাংলার নেতারা এতটাই ব্যর্থ যে তাদের আড়াল করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কখনও এজেন্সিকে ব্যবহার করতে হয়, কখনও ন্যায্য বরাদ্দ আটকে দিতে হয়, কখনও বিএসএফের সীমানা বৃদ্ধি করতে হয়। বিজেপি ঘৃণার রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে। এখন টের পাচ্ছে এভাবেও কিছু সম্ভব নয়।”
এর আগে অবশ্য নড্ডার গোটা বক্তব্য জুড়েই ছিল বাংলার দুর্নীতির প্রশ্ন। তিনি বারবার তৃণমূল সরকারকে তোলাবাজি, সিন্ডিকেটের সরকার বলে আক্রমণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “অন্যায় যারা করে, তারা বেশি দিন চলতে পারে না। যাঁরা ঠিক পথে থাকে তারা কখনও থেমে থাকে না। আজ না হোক কাল তৃণমূলকে শাস্তি পেতেই হবে।” এই প্রসঙ্গে তিনি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের গ্রেফতারির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। সেই সঙ্গে নড্ডা বলেন, “চতুর্থ দফার নির্বাচনের পর তো সেভাবে প্রচার করার সুযোগ পাওয়া যায়নি। না হলে আমরা যে ভাবে প্রচার শুরু করেছিলাম তাতে ফলাফল অন্যরকম কিছু হতে পারত। আপনারা সব ভুলে আবার রাস্তায় নামুন। জয় ছিনিয়ে আনুন। ব্রিগেডে বিজয় উৎসব যাতে করতে পারি তার প্রস্তুতি নিন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।