মঞ্চে অমর্ত্য সেন।
বিদেশ থেকে রাজ্যে এসে ‘জ্ঞান’ দিয়ে যান অমর্ত্য সেন। তাঁর মতামতের কোনও ‘গুরুত্ব’ নেই। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদের ‘জয় শ্রীরাম’ সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এ ভাষাতেই আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যার তীব্র নিন্দা করে কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘স্পর্ধায় ওদের শালীনতা জ্ঞান লোপ পেয়েছে।’’
শনিবার দিলীপবাবু বলেন, ‘‘উনি (অমর্ত্য সেন) বিদেশে থাকেন। রাজ্যে কী ঘটছে, সে বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণা নেই। এখানকার মানুষের জীবনের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। দায় দায়িত্বও নেই। উনি এখানে এসে কী জ্ঞান দিয়ে গেলেন, তাতে কিছু যায় আসে না।’’ দিলীপবাবুর আরও দাবি, অমর্ত্যবাবুকে যাঁরা পরামর্শ দেন, তাঁরা এখন অপ্রাসঙ্গিক।
ঠিক কী বলেছিলেন অমর্ত্যবাবু? শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘লোককে প্রহার করতে হলে এখন এখন এ সব বলা হচ্ছে।’’ এর পর ব্যাখ্যা করে তিনি বুঝিয়ে দেন, এই স্লোগানের সঙ্গে বাংলা সংস্কৃতির কোনও যোগ নেই। এ সবই বাইরে থেকে ‘আমদানি’ করা। যার সঙ্গে এক সময় হিন্দু মহাসভার মানসিকতারও তুলনা করেন তিনি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন দিকে দিকে বিজেপি নেতৃত্ব অমর্ত্যবাবুকে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করেন। মুকুল রায়ের বক্তব্য, ‘‘উনি এত বড় মাপের মানুষ যে বিদেশ থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছে পাইলট গাড়ি-সহ কলকাতায় ঘুরে বেড়ান। ফলে সাধারণ মানুষের কথা উনি জানতেও পারেন না। শুনতে পান না তাঁদের ভাষা। রাম রাজ্য কোনও নতুন ভাবনা নয়।’’ শুধু তা-ই নয়, বিজেপির আর এক রাজ্য নেতা তো সরাসরি অমর্ত্যবাবুর ইতিহাস চেতনা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন!
বিজেপি নেতাদের কড়া সমালোচনা করে এ দিন ফিরহাদ বলেন, ‘‘দিলীপবাবুদের কথাকে যত কম গুরুত্ব দেওয়া যায়, ততই ভাল। রাজ্যের সংস্কৃতি নিয়ে দিলীপবাবুদেরই কোনও জ্ঞান নেই। এর পর তাঁরা রাজ্যের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও হয় তো অস্বীকার করতে শুরু করবেন!’’
বিজেপি অবশ্য এই প্রথম অমর্ত্যবাবুর বিরুদ্ধে নিন্দনীয় ভাষা প্রয়োগ করল না। নোটবন্দির সমালোচনা করায় প্রায় একই কায়দায় অমর্ত্যবাবুর অর্থনীতির জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।