BJP

লক্ষ্য তফসিলি ভোটব্যাঙ্ক, কেন্দ্রের ‘বিকশিত ভারত সংকল্প’ যাত্রার ফয়দা পেতে চায় বিজেপি

কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যেই নরেন্দ্র মোদী বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার ঘোষণা করেন। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে তা থেকে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায় বিজেপি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:০২
Share:

বাংলার কর্মসূচি এখনও তৈরি করেনি বিজেপি। — ফাইল চিত্র।

ঝাড়খণ্ডের খুঁটিতে গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বিকশিত ভারত সংকল্প’ যাত্রার সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের লক্ষ্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। ঠিক হয়েছে, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের গ্রামীণ এলাকায় ঘুরবে এই যাত্রা। প্রথমে তফসিলি অধ্যুষিত ৬৮টি জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চলবে এই কর্মসূচি। এর পরে বাকি এলাকায়। প্রথম পর্বে বাংলার ১২টি লোকসভা এলাকায় এই যাত্রা পৌঁছনোর কথা।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে কবে আসবে এই যাত্রা, এখনও তার সূচি তৈরি হয়নি। তবে তার আগেই এই কর্মসূচি থেকে কতটা রাজনৈতিক লাভ তোলা যায় তার নির্দেশ কেন্দ্রীয় বিজেপির পক্ষে রাজ্যে এসে গিয়েছে। শুধু বাংলাই নয়, দেশের সব রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে বিস্তারিত নির্দেশ পাঠিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ। গত বৃহস্পতিবার পাঠানো সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ১৫ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর দেশের দু’লাখ পাঁচ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাবে এই যাত্রা। দ্বিতীয় পর্যায়ে তা আবার শুরু হবে ৩ ডিসেম্বর। চলবে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত।

গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের ফল অনুসারে তফসিলি জাতি ও জনজাতি এলাকায় বিজেপির ফল তুলনামূলক ভাবে ভাল হয়েছে। এর পরে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতির আসনে বসিয়েছে বিজেপি। তখন থেকেই মনে করা হয়েছিল, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তফসিলি ভোট বেশি করে নিজেদের ঝুলিতে টানার চেষ্টা করবে বিজেপি। ওই কর্মসূচিতে তফসিলি এলাকাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, সেই পরিকল্পনা মতোই চলছে বিজেপি।

Advertisement

কেন্দ্রের এই যাত্রা কর্মসূচির রাজনৈতিক সুবিধা যাতে পাওয়া যায়, তার জন্য কী কী করতে হবে সেটাও অরুণ জানিয়ে দিয়েছেন বলেই বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। অরুণ চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের মন্ত্রীদের এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে। প্রত্যেককেই এই যাত্রার সময়ে তিন দিন করে সময় দিতে হবে। দলের সাংসদ, বিধায়কদেরও এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে। থাকতে হবে রাজ্যসভার সাংসদদেরও।

এই কর্মসূচির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে প্রতিটি রাজ্যে। এক জন করে নোডাল অফিসার থাকছেন জেলা অনুযায়ী। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে দলকে। একই সঙ্গে নির্দেশ, দলকেও সাংগঠনিক ভাবে এর জন্য কিছু পদক্ষেপ করতে হবে। এক জন করে প্রবীণ নেতাকে রাজ্য স্তর এবং জেলায় জেলায় নিয়োগ করতে হবে। যাতে কর্মসূচিতে সাধারণের অংশগ্রহণ থাকে তা নিশ্চিত করতে ১০ থেকে ১৫ জন কর্মীকে যাত্রার সময়ে প্রতি দিন উপস্থিত থাকতে হবে। প্রয়োজনে সকলকে নিয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করতে হবে। সেখানে যেমন পরিকল্পনা তৈরি হবে তেমনই কাজ কেমন হচ্ছে তার উপরে নজর রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে স্বাস্থ্য শিবির, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সাধারণ মানুষের নাম নথিভুক্তিকরণ চলবে। এই কাজের জন্য দলের পক্ষে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে বলেও জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিবরণ-সহ পুস্তিকা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

বিজেপির তরফে এই কর্মসূচির জন্য সর্বভারতীয় স্তরে তিন সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিনোদ তাওড়ে, তরুণ চুখ এবং সুনীল বনসল এই সরকারি কর্মসূচি দলের পক্ষে দেখবেন। প্রসঙ্গত, সুনীল এখন বাংলার দায়িত্বে। তবে বাংলার কোথায় কোথায় যাত্রা যাবে এবং কবে যাবে তার বিস্তারিত নির্দেশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আসেনি। তবে ইতিমধ্যেই দলের তিন তফসিলি সাংসদ কুনার হেমব্রম, খগেন মুর্মু, জন বার্লাকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বার্লা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় তাঁকে বেশি করে ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে বিজেপির। তবে এ নিয়ে দলের নেতারা কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্যই সরকারের এই কর্মসূচি। শাসকদল হিসাবে তা সফল করার দায়িত্ব তো নিতেই হবে। বিস্তারিত নির্দেশ এসে গেলে সবাই জানতে পারবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement