ফাইল চিত্র।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে আসন্ন পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ, সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, রাজ্যে করোনার যা পরিস্থিতি, তাতে ওই ভোট চার সপ্তাহ পিছোনো দরকার। বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল এবং শিলিগুড়ি—রাজ্যের এই চারটি পুর নিগমের ভোট হওয়ার কথা ছিল ২৭ জানুয়ারি। ওই ভোটও একই যুক্তিতে পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করেছিল বিজেপি। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য কটাক্ষ, পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই করোনাকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করে বিজেপি ভোট পিছোনোর দাবি করছে। বিজেপি যে করোনার জন্য উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোট পিছোতে চায়নি, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য রবিবার বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকে দাবি করছি, সব পুরসভা এবং পুর নিগমের ভোট এবং গণনা এক দিনে হোক। আমরা সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করব, বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল এবং শিলিগুড়ি—এই চার পুর নিগম এবং ১০৮টি পুরসভার ভোট গণনা এক দিনে হোক। আর ২৭ ফেব্রুয়ারি আসন্ন ১০৮টি পুরসভার ভোট চার সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হোক।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘কলকাতায় সংক্রমণ কিছুটা কম হলেও কত কম তা পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝা যাবে না। কারণ বহু মানুষ পরীক্ষা করাচ্ছেন না। উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে। আর মৃত্যু বাড়বে না, বিজ্ঞানীরা এ কথা বললেও মৃত্যু খুব কম নয়। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা তা-ই বলছেন। মানুষ যাতে নিশ্চিন্তে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিতে পারেন, তাই আমরা ভোট পিছনোর দাবি করছি।’’ শমীকের আরও ব্যাখ্যা, ‘‘তৃণমূল সরকার ওই পুরসভাগুলির ভোট দু’বছর বা তার বেশি হতে দেয়নি। মানুষ যখন এত দিন গণতান্ত্রিক অধিকার এবং পুর পরিষেবা থেকে বঞ্চিত থেকেছেন, তখন আর চার সপ্তাহ তাঁরা নিশ্চয় অপেক্ষা করতে পারবেন।’’
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আসলে ভরাডুবির ভয়ে করোনাকে ঢাল করে নির্বাচন থেকে পালাতে চাইছে বিজেপি। এই তো কলকাতার পুরভোটে প্রচার করেছে। এখন অন্য কর্পোরশনগুলির ভোটে বিধি ভেঙে প্রচার করছে। বিভিন্ন রাজ্যে প্রচার করছে। আর রাজ্যের অন্য পুরসভার সময় করোনার কথা মনে পড়ছে! গো- হারা হারবে তাই নতুন করে করোনা বাহানা তুলেছে।’’
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ২৭ জানুয়ারি নির্ধারিত চার পুর নিগমের ভোট পিছোনোর দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়। ওই ভোট চার থেকে ছ’সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না, তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বিবেচনা করতে বলে আদালত। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল জানায়, তারা চায়, ওই ভোট পিছিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি করা হোক। নির্বাচন কমিশন সেই আর্জি মেনে নেয়।