অ্যাপ বানাচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
লোকসভা নির্বাচনে তৃতীয় বার নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে ক্ষমতায় আনতে এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি। দেশের অন্য রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাতেও শুরু হচ্ছে বুথ স্তরের সমীক্ষা। সম্প্রতি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা ‘বুথ সশক্তিকরণ অভিযান’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন। সেই অভিযানের প্রথম দফায় হেরে যাওয়া বুথে গিয়ে রাজ্য বিজেপি জানতে চাইবে বিধানসভা নির্বাচনে সেখানকার মানুষ কেন তাদের ভোট দেননি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর জন্য একটি অ্যাপও তৈরি করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই অ্যাপের মাধ্যমে শুরুতে হেরে যাওয়া এলাকার খবরাখবর নেওয়ার পরে জেতা বুথের বর্তমান পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করা হবে।
বাংলার পাশাপাশি গোটা দেশেই এমন সমীক্ষা চালাতে চায় বিজেপি। এই কর্মসূচি পালনের জন্য যে কেন্দ্রীয় দল তৈরি করা হয়েছে, তাতে রয়েছেন বাংলার সাংসদ তথা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে তিনি অন্য রাজ্যের দায়িত্বে। বাংলায় এই কর্মসূচি সফল করার দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে অরবিন্দ রাজ্যে সহ-পর্যবেক্ষক ছিলেন। তবে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে সে ভাবে এই রাজ্যে দেখা যায়নি তাঁকে। দীর্ঘ বিরতির পরে রাজ্যে এসে শনিবারই বুথ সশক্তিকরণ অভিযান নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক করেন তিনি। কলকাতার হেস্টিংসে দলীয় দফতরে হওয়া বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ রাজ্য নেতারা হাজির ছিলেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্প পুরো মাত্রায় শুরু হতে পারে জুলাই মাসের গোড়ায়। সেই সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় বিজেপি একটি অ্যাপ পাঠাবে। সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নও ঠিক করে দেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অ্যাপ নিয়ে বুথে বুথে ঘুরতে হবে দলের সাংসদ, বিধায়কদের। বিজেপি হেরে গিয়েছে এমন ১০০টি বুথে যেতে হবে প্রত্যেক সাংসদকে। আর বিধায়কদের যেতে হবে ২৫টি বুথে। কোনও ভাবেই সাংসদ এবং বিধায়ক একই বুথে যেতে পারবেন না। সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে দলের ঠিক করে দেওয়া প্রশ্নের জবাব নিতে হবে। অ্যাপের মাধ্যমে সেই জবাব সরাসরি দেখতে পাবেন দিল্লির নেতারা। সেই তথ্য পাওয়ার পরে লোকসভা ভোটে রাজ্য অনুযায়ী কেমন নীতি হওয়া উচিত বা কী কী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন তা ঠিক করতে চায় বিজেপি।
সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ কলকাতায় এসে এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, অরবিন্দ মেনন কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবে থাকলেও বাংলায় এই কর্মসূচির মূল দায়িত্বে থাকবেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই রাজ্যে তো বটেই, দেশে এত বড় সমীক্ষা আগে হয়নি। প্রথম দফায় অল্প বুথে হলেও পরে অনেক বেশি জায়গায় গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের চাহিদা বোঝা হবে। সব নথিবদ্ধ থাকবে দলের বানানো অ্যাপে।’’ ওই নেতা জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি রাজ্যের সাংসদ, বিধায়ক এবং জেলা স্তরের নেতাদের অ্যাপ ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।