গ্রাফিক।
রবিবার নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিজেপি-র আলিপুরদুয়ার জেলার বিজেপি সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা আর সোমবারই তিনি অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আর এর পরে বিজেপি-র অন্দরেই উঠেছে প্রশ্ন। কেন গঙ্গপ্রসাদের মতো পুরনো নেতা দলবদল করলেন তা পর্যালোচনা করা উচিত বলে সরব রাজ্য বিজেপি-র সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠক। গঙ্গাপ্রসাদের দলবদলের দিনেই রাজকমলের ক্ষোভ প্রকাশ নিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতারা রীতিমতো অস্বস্তিতে। কেউই এই ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইছেন না।
রাজ্য বিজেপি-তে ‘আদি’ শিবিরের নেতা হিসেবে আগেও নানা বিষয়ে মুখ খুলেছেন রাজকমল। এ বার তাঁর বক্তব্য, ‘‘গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার মতো একজন পুরনো নেতাকে বিজেপি হারাল। এর জন্য আমি অত্যন্ত ব্যথিত এবং দুঃখিত। দল ছাড়ার জন্য হয়ত অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু তার জন্য গঙ্গাদার দল ছাড়া উচিত হয়নি।’’ একই সঙ্গে রাজকমল বলেন, ‘‘দলের নেতৃত্বকেও ভেবে দেখতে হবে কেন গঙ্গাদা চলে গেলেন। আমি নেতৃত্বকে অনুরোধ করব যাতে বিষয়টা গভীর ভাবে পর্যালোচনা করা হয়। সেটা না হলে আরও অনেক পুরনো নেতা, কর্মী দল ছেড়ে চলে যেতে পারেন।’’
গঙ্গপ্রসাদ একটা সময় আরএসএস কর্মী ছিলেন। সঙ্ঘ পরিবারের সদস্য হিসেবেই বিজেপি-তে আসেন। পর পর দু’দফায় আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতিও থেকেছেন। রাজকমলের দাবি, ‘‘আলিপুরদুয়ারে বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে জিতেছে। বিধানসভা নির্বাচনেও জেলায় পাঁচটি আসনে জিতেছে। শুধু এ বারই নয়, গত বিধানসভা নির্বাচনেও মাদারিহাট বিধানসভা আসনে জিতেছিলেন মনোজ টিগ্গা। এমন একজন সফল জেলা সভাপতি চলে যাওয়াটা দলের ক্ষতি।’’ রাজ্য বিজেপি নেতারা অবশ্য গঙ্গাপ্রসাদের বিজেপি ত্যাগকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাননি। কিন্তু রাজকমলের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি বড় দল। দু-এক জন নেতা চলে গেলে কিছু ক্ষতি হয় না। কিন্তু বাড়ির একটা ইট খসে যাওয়াও কষ্টের। আমি চাই কারণ খোঁজা হোক।’’
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি আশানুরূপ ফল না করার পরে পরেই দলে ভাঙন শুরু হয়। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষালের মতো নেতারা রীতিমতো বেসুরো। প্রার্থী হননি এমন বিজেপি-তে নবাগতদের অনেকে ইতিমধ্যেই তৃণমূলে ফিরেছেন। কিন্তু এই প্রথম কোনও পুরনো নেতা তৃণমূলে গেলেন। এটাকে খারাপ সঙ্কেত বলে মনে করছেন রাজকমল। তিনি বলেন, ‘‘আমি দলের ভিতরেও এটা বলব। যাঁরা স্বার্থের জন্য বিজেপি-তে এসেছিলেন তাঁরা ফিরে যাবেন এটা স্বাভাবিক। কিন্তু গঙ্গাদার মতো পুরনো কর্মী চলে যাওয়াটাকে তার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।’’ প্রসঙ্গত বিজেপি পুরনো নেতা, কর্মীদের গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ শোনা গিয়েছে গঙ্গাপ্রসাদের গলাতেও। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘দলের দু’দুবারের বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে বঞ্চিত করে শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করে নেতৃত্ব ঠিক করেনি।’’