আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের পলিটব্যুরো কো অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট ও রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যপালের দফতর-সহ কেন্দ্রীয় নানা বিভাগকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের উপরে খবরদারি করতে চাইছে বলে সরব হলেন প্রকাশ কারাট। এই প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরই কার্যত শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
উপাচার্য ও শিক্ষক নিয়োগের নিয়মে বদল আনতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। কেন্দ্রের তরফে এই মর্মে খসড়া পাঠানো হয়েছে রাজ্যগুলির কাছে। কেন্দ্র তথা ইউজিসি-র এই উদ্যোগের বিরোধিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে নিউ টাউনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজনৈতিক ভাবে প্রতিবাদের পাশাপাশি প্রয়োজনে আইনি বিরোধিতার পথেও যাওয়া হবে। বৈঠকের পরে কলকাতায় সিপিএমের পলিটব্যুরোর কো-অর্ডিনেটর কারাট রবিবার বলেছেন, ‘‘এই খসড়া অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান হবেন আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালের মনোনীত প্রতিনিধি। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা থাকবে না। অথচ রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয় চালানোয় রাজ্য সরকারের আর্থিক ও অন্যান্য ভূমিকা থাকে। কেন্দ্রের এই উদ্যোগ মানা যায় না।’’ এই প্রসঙ্গে বাংলার কথাও উল্লেখ করেছেন কারাট। তাঁর কথায়, ‘‘যে সব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি, সেখানে রাজ্যপালের দফতর এবং অন্যান্য বিভাগকে কাজে লাগিয়ে ঘুরপথে নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে তারা। কেরল, তামিলনাড়ু ও বাংলায় রাজ্যপালের দফতরের মাধ্যমে এই জিনিস দেখা গিয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, তামিলনাড়ু ও কেরলের সরকার ইউজিসি-র খসড়া বিধি নিয়ে আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে ইতিমধ্যেই কথা বলেছে।
প্রসঙ্গত, এ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ইতিমধ্যেই মন্তব্য করেছেন, ‘‘ইউজিসি-র চেয়ারম্যানকে বলব, রাজ্যের রাজ্যপালের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট কী বলেছে, দেখে নিতে। বিজেপি যে বহুত্ববাদ ও সংবিধান মানে না, সেটাই ইউজিসি-র চেয়ারম্যানের কথায় প্রতিনিধিত্ব হয়েছে। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গড়া যায় না।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘এক দেশ, এক ভোট’ প্রস্তাবেরও কড়া বিরোধিতা করেছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। ওই নীতি এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রসঙ্গে কারাট যা বলেছেন, তার নির্যাসেও তৃণমূলের অভিযোগের সঙ্গে কার্যত ফারাক যাচ্ছে।